দেশের নাম অ্যান্ডোরা। ফুটবল বিশ্ব তো দূরে থাক, এমনিতেই চেনা মুশকিল। স্পেনের বার্সেলোনা ও ফ্রান্সের মধ্যবর্তীতে অবস্থিত দেশটির আয়তন মাত্র ৪৬৭.৫৩ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা ৮৫,০৮২। ইউরো-২০১৬ এর বাছাই পর্বে এই দেশটির বিপক্ষেই মঙ্গলবার খেলতে নেমেছিল গ্যারেথ বেলের দেশ ওয়েলস। রিয়াল মাদ্রিদের স্ট্রাইকার গ্যারেথ বেলের জোড়া গোলে ওয়েলস জিতেছে ২-১ গোলে। তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ‘থ্রি-জি’ বা ‘থার্ড জেনারেশন’ মাঠ। অ্যান্ডোরার এস্তাদি ন্যাসিওলেনের মাঠটি ফুটবল ইতিহাসের প্রথম ‘থ্রি- জি’ মাঠ। আর ‘থ্রি-জি’ মাঠের প্রথম ম্যাচেই চোখে শর্ষে ফুল দেখলো দুই দলের খেলোয়াড়রা। কখনও পিছলে পড়ে আবার কখনও নিচ থেকে আবার উঠে অন্য খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে একাকার হয়েছে এদিন। খেলোয়াড়দের প্রায়ই হোঁচট খেয়ে পড়তে দেখা গেছে। পাসিং ফুটবল খেলতে গেলে খবর আছে। বল মাটি থেকে যেন উঠতেই চায় না। অপরিচিত দেশের অপরিচিত ‘থ্রি-জি’ মাঠে খেলার পর গ্যারেথ বেল নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানালেন। বলেন, ‘জীবনেও আমি এমন বাজে মাঠে খেলিনি। মাঠের অবস্থা বলে বুঝানো যাবে না। কেউই আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারিনি।’ ‘থ্রি-জি’ মাঠ আসলে প্লাস্টিকের ঘাস দিয়ে তৈরি করা। কৃত্রিম ঘাসের নিচে দেয়া গুঁড়ো গুঁড়ো রাবার। গ্রীষ্ম কিংবা বৃষ্টিতেও মাঠে খেলা যাবে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা আছে এই মাঠের। দীর্ঘদিন ধরে ‘থ্রি-জি’ মাঠে খেলা আয়োজন করার চেষ্টা করে আসছিল অ্যান্ডোরা। তবে ইউরোপের ফুটলব নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (ইউয়েফা) তাদের অনুমোদন দেয়নি। তবে ইউরো-২০১৬ এর বাছাই সামনে রেখে গত সপ্তাহে এই মাঠে খেলার অনুমোদন দেয় ইউয়েফা। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই এই হাল!
এদিন গ্যারেথ বেলের একক নৈপুণ্যেই ওয়েলস জয় দিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে। সর্বশেষ ৪৫ আন্তর্জাতিক ম্যাচে কোন জয় নেই অ্যান্ডোরার। আন্তর্জাতিক ম্যাচে তাদের সর্বশেষ গোল ছিল ৪ বছর আগে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে। তবে ৪ বছর পর এদিন প্রথম আন্তর্জাতিক গোল পায় তারা। ওয়েলসের বিপক্ষে ম্যাচের ৬ষষ্ঠ মিনিটেই ইদেফোনস লিমার পেনাল্টিতে এগিয়ে যায় অ্যান্ডোরা। ২২ মিনিটে ওয়েলসকে সমতায় ফেরান গ্যারেথ বেল। ওয়েলসের জন্য ম্যাচটি ড্র করাও ছিল লজ্জাকর। আর এমন পরিণতির দিকেই যাচ্ছিল ম্যাচের ভাগ্য। কিন্তু ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার ৯ মিনিট আগে ওয়েলস সমর্থকদের স্বস্তি এনে দেন বেল। দারুণ এক ফ্রি-কিকের মাধ্যমে গোল করে ওয়েলসের জয় নিশ্চিত করেন রিয়ালের এই স্ট্রাইকার।