ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম শফিউল ইসলাম হত্যাকান্ডে জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্টত শনিবার রাত থেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনায় আরো ১৪ জনকে আটক করে পুলিশ।
মহানগর ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ জানান, এ পর্যন্ত এ ঘটনায় মোট ২৯ সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। এরা বর্তমানে ডিবি হেফাজতে রয়েছেন। এদের বেশ কয়েকজন জামায়াত-শিবির ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী। শিগিগরই এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওসি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত হত্যাকান্ডের কোন ক্লু উদ্ধার হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, লালন ও মাজার ভক্ত হওয়ায় তিনি উগ্র মৌলবাদ ও জঙ্গীগোষ্ঠী দ্বারা হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। উদ্ধারকৃত আলামত থেকে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরই অংশ হিসেবে কথিত জঙ্গীগোষ্ঠী আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২ এর স্বীকানোক্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশপাশি জামায়াত-শিবিরেরও সংশ্লিষ্টতা খোঁজা হচ্ছে।
অন্যদিকে, রাজশাহী নগরীর মতিহার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসন জানান, ড. শফিউলের হত্যাকারীদের আটক করতে রোববার রাতভর নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ও মতিহার থানাসহ বেশ কয়েকটি টিম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়।
এসময় নগরীর শ্যামপুর এলাকার বাসা থেকে ছাত্রদল নেতা মামুন এবং মির্জাপুর এলাকার রিমা ছাত্রাবাস থেকে ৫ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এছাড়া বিনোদপুর, কাটাখালি, চৌদ্দপাইসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ১৫ জনকে আটক করা হয়। তদন্তের স্বার্থে অন্যদের নাম-পরিচয় জানাতে রাজি হননি ওসি। আটককৃতদেরকে মহানগর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
শিক্ষক হত্যাকা-ের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ চলছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। মঙ্গলবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। এছাড়া আগামী সাতদিন কালো ব্যাজ ধারণসহ ১৯ নভেম্বর নগরীর জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন করবেন শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি কামরুল ইসলাম মজুমদার জানান, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে প্রশাসনকে ১৫ দিন সময় বেধে দেয়া হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে আরো কর্মসূচি দেয়া হবে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক সমিতি। এতে বিশ্ববিদ্যায়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেছে। পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি শেষ হয় পৌনে ১১টায়।
এরপর বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতেও একাত্মতা ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতাকর্মীরা।