মুসা বিন শমসের স্বীকার করেছেন, সুইস ব্যাংকে আটকে থাকা অর্থ অস্ত্র ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের আলোচিত ব্যবসায়ী এবং বিজনেস টাইকুন নামে খ্যাত মুসা বিন শমসেরের সম্পদের উৎস অনুসন্ধানে নেমে মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠালে দুদক-এর কাছে তিনি একথা স্বীকার করেন। বুধবার দুদক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন সময় সংবাদকে একথা জানিয়েছেন। ১৮ই ডিসেম্বর নিজের সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুদক কার্যালয়ে এসে স্বীকারোক্তি দেন মুসা বিন শমসের।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের ভাষ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের। যার সম্পত্তির মূল্য ১২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। সুইস ব্যাংকে আটকে আছে বাংলাদেশি অর্থ মূল্যে ৫১ হাজার কোটি টাকা।
এছাড়া আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মাধ্যমে মুসা বিন শমসের জনশক্তি রপ্তানি এবং অস্ত্র ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত বলে খবর প্রকাশ করা হয়। এসব তথ্যের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সাময়িকী ‘বিজনেস এশিয়া’ র প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
বিপুল এই অর্থ ও সম্পদ অর্জনের উৎস কি তা জানতে দুদকের দেয়া নোটিশের প্রেক্ষিতে দুদক কার্যালয়ে হাজির হন এই ব্যবসায়ী। তবে আয়ের উৎস নিয়ে কথা না বললেও বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।
মুসা বিন শমসের বলেন, ‘এ অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। এই পরিমাণ টাকা বাংলাদেশে আগামী ৫০ বছরেও কেউ উপার্জন করতে পারবেনা, তাই এই পরিমাণ টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচারের তথ্য একবারেই মিথ্যা।’
অবশেষে মুসা বিন শমসেরের সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধান সম্পর্কে মুখ খুললেন দুদক কমিশনার।
দুদক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘অস্বাভাবিক জীবনবৃত্তান্ত, অস্বাভাবিক জীবনযাত্রা, সবকিছুই তার অস্বাভাবিক। এগুলো দেখেই আমাদের মনে হয়েছে এই ব্যাপারে অনুসন্ধান হওয়া প্রয়োজন।’
তিনি জানান দুদকের কাছে থাকা তথ্য মতে এই সম্পদ অস্ত্র ব্যবসায়ের মাধ্যমে অর্জিত।
দুদক কমিশনার বলেন, ‘সে স্বীকার করেছে যে তার অস্ত্র ব্যবসা ছিলো এবং আছে। একইসাথে এটাও স্বীকার করেছে যে তার এই টাকা আয়ের পেছনেও অস্ত্রব্যবসাই মুখ্য। বাংলাদেশী একজন নাগরিক হিসেবে তার আয়-ব্যয়ের হিসাব দুদক চাইতেই পারে এবং অনুসন্ধানও করতে পারে। সে সুইস ব্যাংকে তার টাকা আটকানোর কথাও স্বীকার করেছেন, কিন্তু এই টাকার উৎস তিনি ঠিকভাবে দেখাতে পারেন নাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই প্রথমবার তাকে এখানে ডাকা হলো, প্রয়োজন হলে তাকে আবারো ডাকা হবে।’
বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের উৎস জানতে দুদকের দেয়া নোটিশের প্রেক্ষিতে গত ১৮ ডিসেম্বর দুদকে হাজির হলে প্রায় চার ঘণ্টা মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।