ভারতীয় দল মেলবোর্ন থেকে সিডনিতে পৌঁছে সন্ধ্যা ৬টার দিকে। ততক্ষণে বর্ষবরণ উপলক্ষে সিডনি হারবারে হাজার আলোর রোশনাই। উৎসুক মানুষ ‘থার্টিফার্স্ট’য়ের প্রহর গোনায় মগ্ন। মধ্যরাত যত ঘনিয়ে এসেছে, ততই সে মগ্নটা খান খান হয়েছে উৎসবের কোলাহলে। আর ২০১৫-র প্রথম প্রহরে আলোকরাজির সঙ্গে বর্ষবরণ হয়েছে উদ্দামতায়। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ থেকে বিরাট কোহলির হাতে নেতৃত্বের ব্যাটন বদলটার সঙ্গে কেমন যেন মিল এই মগ্নতা ভেঙে উদ্দামতা ছড়িয়ে পড়া।
দলের বড় জয় কিংবা হারেও একই অভিব্যক্তি মহেন্দ্র সিং ধোনির, মনে হতো কোথাও বুঝি তেমন কিছু ঘটেইনি! সেখানে অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ শুরুর পর থেকেই দারুণ আগ্রাসী বিরাট কোহলি। সিরিজের প্রথম তিন টেস্টে ‘স্লেজিং’য়ের যে কটা ফ্রেম আছে, তার সবগুলোতেই দেখা গেছে কোহলিকে। ২৫ বছর বয়সী এ উদ্ধত যুবককে নিয়ে তাই গবেষণার অন্ত নেই অস্ট্রেলীয় মিডিয়ার। মাঠে অভ্যতার দায়ে যে জাতি সর্বাধিক ধিকৃত, সেই অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়াই কোহলির ঔদ্ধত্যের সমালোচনায় মুখর!
তাই ভারতীয় দল সিডনিতে পা রাখতেই অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়া সচেতনভাবে ফিরিয়ে এনেছে ‘মাঙ্কিগেটের’ স্মৃতি। এ মাঠেই তো অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস আর হরভজন সিংয়ের বাগ্যুদ্ধকে ঘিরে টানাপড়েন শুরু হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া-ভারত ক্রিকেটীয় সম্পর্কে। সে মাঠেই আনুষ্ঠানিকভাবে অধিনায়কত্বের ক্যারিয়ার শুরু করতে যাচ্ছেন এমন একজন, গত তিন ম্যাচে যিনি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সবচেয়ে উদ্ধত ভিনদেশির ‘সুনাম’ কুড়িয়েছেন!
অস্ট্রেলিয়ার কোচ ড্যারেন লেম্যান তো মেলবোর্ন টেস্টের পরই হুঙ্কার দিয়েছিলেন, ‘আমরা তো এখনো শুরুই করিনি!’ এই শুরু মানে, মাঠে ভারতীয়দের, বিশেষ করে বিরাট কোহলিকে ‘জ্বালানো’ এখনো শুরু করা হয়নি, অজি কোচের ইঙ্গিতটা স্পষ্ট। তাঁর হুমকিতে যে দমে যাওয়ার পাত্র নন, সে তো আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন কোহলি, ‘(মিচেল) জনসনকে শ্রদ্ধা করার বিশেষ কোনো কারণ আছে কি?’ ‘অ্যান আই ফর অ্যান আই’, চোখে চোখ রেখে ইটের বদলে পাটকেল ছুড়তে ভারতের নতুন অধিনায়কের চিত্ত বাধা দেবে না নিশ্চিতভাবেই।
তবে ওই টেস্ট শুরু হবে সোমবার। তাই নতুন অধিনায়ককে নিয়ে নতুন বছর উদ্যাপনটা আনন্দঘন পরিবেশেই কাটিয়েছে ভারতীয় দল। নতুন বছরের প্রথম দিন বিকেলেই চায়ের নিমন্ত্রণ করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জন অ্যাবোট। সেখানে হাস্যোজ্জ্বলই দেখিয়েছে কোহলিকে। পুরো দল নিয়ে ফটোসেশনের পর মাঝে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে ফ্রেমবন্দি হওয়ার সময়ও হাসিখুশিই ছিলেন বিরাট কোহলি। ক্রিকইনফো, সিডনি মর্নিং হেরাল্ড
–