দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর
বহরে আরও ১১টি যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হচ্ছে। এর
মধ্যে চারটি চীন ও একটি যুক্তরাষ্ট্র
থেকে কেনা হচ্ছে।
বাকি ছয়টি খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মাণাধীন।
এ ছাড়া নৌবাহিনী সরকারের কাছে জলসীমায়
দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ, উড়োজাহাজ ইত্যাদির
উদ্ধারকাজে ব্যবহারের জন্য একটি রেসকিউ
অ্যান্ড স্যালভেজ শিপ কেনার প্রস্তাব করেছে।
সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়-
সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আজ
মঙ্গলবার নৌবাহিনী এসব তথ্য জানায়।
তবে এসব কেনাকাটায় সরকারের কী পরিমাণ
টাকা ব্যয় হচ্ছে, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য
দেওয়া হয়নি। বৈঠকে কক্সবাজারের পেকুয়া ও
পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দরে দুটি সাবমেরিন
ঘাঁটি নির্মাণের জন্য
নৌবাহিনী থেকে জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব
করা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান
প্রথম আলোকে বলেন, ফোর্সেস গোল ২০৩০
(সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে গৃহীত
দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা) অনুযায়ী নৌবাহিনীর
জন্য ফ্রিগেট, করভেট, সাবমেরিন, মেরিটাইম
এয়ারক্রাফটসহ বেশ কিছু জাহাজ কেনার
পরিকল্পনা করা হয়েছে। সংসদীয় কমিটি তাদের
পরিকল্পনাকে সমর্থন দিয়েছে। এ
ছাড়া কমিটি নৌবাহিনীকে দ্রুত মেরিটাইম পলিসির
(সমুদ্রনীতি)
খসড়া তৈরি করে তা কমিটিতে উপস্থাপন
করতে বলেছে।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে,
১১টি যুদ্ধজাহাজের মধ্যে চলতি বছর চীন
থেকে বানৌজা স্বাধীনতা ও বানৌজা প্রত্যয়
নামের দুটি জাহাজ কেনা হবে। যুক্তরাষ্ট্র
থেকে সংগ্রহ করা হবে একটি পুরোনো ফ্রিগেট।
খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মাণাধীন
রয়েছে দুটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি ও
দুটি কনটেইনার ভেসেল। এ ছাড়া ২০১৬ সালে চীন
থেকে সংগ্রহ করা হবে দুটি সাবমেরিন।
খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মাণাধীন দুটি লার্জ পেট্রল
ক্রাফট, যা ২০১৭ সালে বহরে যুক্ত হবে।
বর্তমানে নৌবাহিনীতে ১৭টি জাহাজ ও
চারটি এয়ারক্রাফট আছে। এর মধ্যে গত বছর চীন
থেকে দুটি নতুন এবং যুক্তরাজ্য
থেকে একটি পুরোনো জাহাজ সংগ্রহ করা হয়। এ
ছাড়া বাংলাদেশের আনন্দ শিপইয়ার্ড
থেকে একটি এবং নারায়ণগঞ্জ
শিপইয়ার্ডে দুটি জাহাজ নির্মাণ করা হয়েছে।
কার্যপত্রে আরও জানা যায়, পেকুয়া ও
পায়রা সমুদ্রবন্দরে দুটি সাবমেরিন ঘাঁটির জন্য
যথাক্রমে ৪১৯ দশমিক ৮৫ এবং ১৯৩ দশমিক ৮৩
একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
দুটি ঘাঁটির নির্মাণকাজ ২০১৬ সালের মধ্যে শেষ
হবে।
সেনাবাহিনী থেকে বৈঠকে জানানো হয়,
সেনাবাহিনীকে অত্যাধুনিক বাহিনীতে পরিণত করার
জন্য ইতিমধ্যে এসপি গান, উইপন
লোকেটিং রাডার, মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম,
চতুর্থ প্রজন্মের ট্যাংক,
ট্যাংকবিধ্বংসী দূরনিয়ন্ত্রিত স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র,
এআরভি ও ওয়্যারলেস সেটসহ বিভিন্ন ধরনের
যুদ্ধ সরঞ্জাম কেনা হয়েছে।
কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভূঁইয়ার
সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সদস্য মুহাম্মদ
ফারুক খান, মাহবুবুর রহমান, দীপু মনি, ইলিয়াস
উদ্দিন মোল্লাহ ও হোসনে আরা বেগম অংশ নেন।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস
অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবিব, বিমানবাহিনীর
প্রধান এয়ার মার্শাল ইনামুল বারী,
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী হাবিবুল
আউয়াল প্রমুখ।