শুরুতে আশা জাগালেও শেষটা হয়েছে বিষাদময়ই। বিশ্বকাপের আগে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের সঙ্গে সোমবার তিন উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ।
সিডনির অলিম্পিক পার্ক ওভারে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ৪৯.৫ ওভারে অল আউট ২৪৬ রানে। জয়ের জন্য পাকিস্তানের টার্গেট ২৪৭ রান। এমন লক্ষ্যে পৌছাতেও পাকিস্তানকে খোয়াতে হয়েছে সাত উইকেট। তবে লড়াই হয়েছে ভালোই। একসময় মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ জিতেও যেতে পারে। কিন্তু না।
জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতে বেশ নাজুক অবস্থাই ছিল পাকিস্তানের। দুই ওপেনার সাজঘরে ফেরেন দ্রুতই। দলীয় রান যখন দুই, তখন সরফরাজ আহমেদকে (১) এনামুলের ক্যাচ বানান রুবেল হোসেন। এরপর মাশরাফি ঝলক। দলীয় আট রানে আহমেদ শেহজাদকে (৫) আউট করেন তিনি। তবে শুরুর এই ধাক্কা দ্রুতই কাটিয়ে ওঠে পাকিস্তান। তৃতীয় উইকেটে ইউনিস-সোহেলের ৪৪ রানের জুটি দলকে এনে দেয় স্বস্তি। দলীয় ৫২ রানে ইউনিস খানকে (২৫) বিদায় করেন তাসকিন আহমেদ। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে সোহেল-মাকসুদ এনে দেয় ৫১ রান। ৩৯ রান করে সোহেলকে বিদায় করেন মাহমুদুল্লাহ। তখন পাকিস্তানের দলীয় রান ১০৩।
এরপর উমর আকমলকে সাথে করে আগাতে থাকেন মাকসুদ। দলীয় ১৬৬ রানে উমর আকমলকে (৩৯) ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি। পাক অধিনায়ক মিসবাহ খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। মাত্র ১০ রান করেই বোল্ড হন তাসকিনের বলে। কিন্তু পাকিস্তানের স্কোর তখন দুইশর কাছে। কারণ মাকসুদ ততক্ষণও ক্রিজে ছিলেন সচল ব্যাট হাতে। এরপর আফ্রিদি এসে ২০ বলে ২৪ রান করলে জয়ের খুব কাছাকাছি চলে যায় পাকিস্তান। আফ্রিদিকে আউট করেন সাকিব আল হাসান। শেষ পর্যন্ত ৪৮.১ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌছে যায় পাকিস্তান। ৯০ বলে ৯৩ রান করা শোয়েব মাকসুদ শেষ পর্যন্ত ছিলেন অপরাজিত। লক্ষ্য আরও বড় হলে হয়তো সেঞ্চুরিই করতেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে মাশরাফি ও তাসকিন নেন দুটি করে উইকেট। রুবেল, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ পান একটি করে উইকেট।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটাও ছিল বাজে। স্কোরবোর্ডে এক রান উঠতেই শূন্য রানে রাজঘরে ফেরেন এনামুল হক। সোহাইল খানের বলে শোয়েইব মাকসুদের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তিনে নামা মুমিনুল ৭ রান করে হ্যারিস সোহেলের বলে ক্যাচ দেন তাঁরই হাতে। বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে দলের হার ধরেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ। এই তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৬৮ রান তুলে প্রথমে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। ব্যক্তিগত ৮৩ রানে মাহমুদউল্লাহ রান আউটের দুর্ভাগ্যের শিকার না হলে বাংলাদেশের সংগ্রহটা নিশ্চিত ভাবেই আরও বাড়তে পারত। ৮১ রান করে তামিমও ফেরেন বাজে সময়ে। ১০৯ বলে মাহমুদউল্লাহ করেন ৮৩ রান। যার মধ্যে ছিল ৫টি বাউন্ডারি। তামিমও ১০৯ বল ও ৫টি চার খেলে সাজান তাঁর ৮১ রানের ইনিংসটি।
এরপর কিছুটা লড়েছেন সাকিব আল হাসান। ৩০ বলে ৩১ রান করেন তিনি। মুশফিক আউট হন শূন্য রানে, প্রথম বলেই, ইয়াসির শাহর হাতে। সৌম্য করেন ১৫ রান ১৭ বলে। তিনি ফেরেন ওয়াহাব রিয়াজের বলে, উমর আকমলের হাতে ধরা পড়ে। সাব্বির, মাশরাফি ও আরাফাত সানি ইনিংসের শেষ ওভারে মোহাম্মদ ইরফানের শিকারে পরিণত হলে বাংলাদেশের সংগ্রহ আড়াই শয়ের কোটা পেরোয়নি।
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ পাচ উইকেট নেন মোহাম্মদ ইরফান। ইয়াসির শাহ দুটি, সোহাইল খান ও ওয়াহাব রিয়াজ নিয়েছেন একটি করে উইকেট। আফ্রিদি ১০ ওভারে ৫৬ রান দিলেও উইকেট পাননি একটিও।