স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে তার ব্যাট থেকে ৯৫ রানের এক ইনিংস আসার পর স্বস্তিতেই ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে, শেষ ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে আবারও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তামিম ইকবাল। দুই ম্যাচে করেছের মাত্র ১৫ রান।
তাই, আগের দুই ম্যাচে গোটা দলের পারফরম্যান্স যেমন কোয়ার্টার ফাইনালে ভাল খেলতে আশাবাদ যোগাচ্ছে, তেমনি তামিমের ব্যাটিং করছে শঙ্কিত। তার ফর্মে ফেরার প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচক কমিটির সদস্য ও সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘আমরা ভীষণভাবেই চাইছি তামিম সেই ম্যাচের ফর্ম ফিরে পাক এই ম্যাচে।’
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে তামিমকে নিয়ে এতো আলোচনার কারণ হল, ভারতের বিপক্ষে তার পারফরম্যান্স। বিশ্বকাপের দু’দলের মধ্যকার ম্যাচে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন ওপেনার তামিম ইকবাল। ২০০৭ সালে পোর্ট অব স্পেনে ৫১ রানের ইনিংসের পর চার বছর পর ঢাকাতেও তার ব্যাট থেকে আসে ৭০ রানের এক ইনিংস। আর এটাই ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপে বাংলাদেশি কোন ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
সৌরভ গাঙ্গুলি বলেছেন, ভারতকে হারাতে পারবে না বাংলাদেশ। মানে তিনি বলতে চেয়েছেন, ভারতের মতো ফর্মে থাকা দলকে হারানের ক্ষমতা হয়ে ওঠেনি বাংলাদেশের। সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে যুক্ত সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার সিধু বাংলাদেশকে নিয়ে হামেশাই কটাক্ষ করেন, তাচ্ছিলো করেন। ভারত- বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে অবশ্য এখনও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তীর্যক কিছু নিশ্চই তিনি বলবেন। সুনীল গাভাস্কার আগাগোড়াই একজন নিরেট ভদ্রলোক। তিনি বাংলাদেশকে ছোট করেননি। বরং ভারতকে সর্তক করে দিয়ে বলেছেন, এই বাংলাদেশ যে কোনো কিছুই করে দেখাতে পারে। ১৯ মার্চ মেলবোর্নে কিছু একটা করে দেখাতে চাইছে টাইগাররাও। সাকিব, তাসকিনদের মুখে সেই প্রতিজ্ঞা। প্লিজ, গা ঝাড়া উঠুন তামিম ইকবাল। গাঙ্গুলি, সিধুদের মুখ বন্ধ করতে হলে যে আপনাকে জ্বলে উঠতে হবে। প্রথম পাওয়ার প্লের সুযোগটা পুরোপুরি নিতে হবে। যেই কাজ তিনি ভারতের বিপক্ষে অনেবারই করেছেন। আপনার দিকে তাকিয়ে আছে গোটা দেশ। ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সে ম্যাচে মারকুটে ব্যাটিং করেছিলেন ওপেনার তামিম। তার হাফ সেঞ্চুরিই সহজ জয়ে পৌঁছে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। ভারতের বিপক্ষে তামিমের রেকর্ড অসাধারণ।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তিনি রান করেছেন ২৯.৫৮ গড়ে। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে তার ব্যাটিং গড় ৩৯.৫০। স্ট্রাইক রেটও ঈর্ষনীয়। ১০ ম্যাচে ৫ হাফ সেঞ্চুরিতে ভারতের বিপক্ষে তার মোট রান ৩৯৭। ভারতের বোলারদের বিপক্ষে বরাবরই তিনি পাওয়ার প্লের সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেন। ভারতের মতো সেরা দলকে হারাতে হলে শুরুতে তামিমকে জ্বলে উঠতেই হবে। কিন্তু সমস্যাটা হলো- তার ফর্ম নিয়ে। বিশ্বকাপের পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই তিনি ফ্লপ। স্কটল্যান্ডের সঙ্গে ৯৫ রানের ইনিংস বাদ দিলে বাকি চার ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ১৯, ৪, ২ ও ১৩। প্রথম দুই ম্যাচে ফ্লপ ছিলেন স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জ্বলে উঠলেন। পরের দুই ম্যাচে ফ্লপ। সূত্র বলছে, ভারতের বিপক্ষে জ্বলে উঠবেন তামিম ইকবাল! তার উপর অনেকটাই নির্ভর করছে বাংলাদেশের জ্বলে ওঠা। তামিমকে অন্তত ২৫ ওভার পর্যন্ত উইকেটে থাকতে হবে। মানে বড় ইনিংসের ভালো একটা প্ল্যাটফর্ম বানিয়ে দিতে হবে। তামিম কি শুনতে পাচ্ছেন? মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিক এবং সাকিবদের উপর দায়িত্ব থাকবে স্কোরটা বাড়িয়ে নেওয়া। ভারতের বিপক্ষে জয়ের জন্য যে আকুল হয়ে আছে গোটা দেশ।