সংবাদদাতা আমতলী ।।
বরগুনার আমতলী তালতলী সহ জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে অবাধে শামুক নিধন ও বিক্রয়। উপজেলার বিভিন্ন জলাভূমি ও কৃষি জমি থেকে নির্বিচারে চলছে শামুক নিধনের উৎসব। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে স্থানীয় কৃষি জমি ও প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর। এতে কৃষি জমি হারাচ্ছে উর্বরতা ও পরিবেশে হারাচ্ছে স্বাভাবিক ভারসাম্যতা। ফলে এলাকার পরিবেশে দেখা দিচ্ছে বিপর্যয়ের আশংকা। উপজেলাগুলোর নিম্মঞ্চলে অধিকাংশ কৃষি জমি ও জলাভূমি বর্ষার মৌসুমে অর্থ্যাৎ বৈশাখ মাসের শেষ দিক থেকে শুরু করে কার্তিক মাসের শেষ পর্যন্ত বর্ষার পানিতে ডুবে থাকে। এসব কৃষি জমি ও জলাভূমিতে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয় অসংখ্য শামুক। এটি একটি নীরিহ জলজ প্রানী হওয়ায় সহজেই একে কুড়িয়ে নেয়া যায়। শামুকের খোলসের ভেতরের নরম অংশ চিংড়ি সহ বিভিন্ন মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হওয়াতে দক্ষিনাঞ্চলের ঘের মালিকেরা শামুক ক্রয় করে নিচ্ছে। দিন দিন এর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এটি এখন এক ধরনের অর্থকরী পন্যে পরিনত হয়েছে। এ কারনে মূল্যবান এ পন্যটি কেনা বেচায় জড়িয়ে পড়ছে স্থানীয় দরিদ্র নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোররা। বর্ষা মৌসুমে এখানকার দরিদ্র জনসাধারন প্রতিদিন ৫-৭ মন শামুক সংগ্রহ করে তারা অতিরিক্ত আয়ের পথ আবিস্কার করেছে। এই ধরনের উপায়ে অর্থ লাভের আশায় জড়িয়ে পড়ছে এক শ্রেনীর মানুষ। রোদের সময় শামুক পানির নিচের অংশে চলে যাওয়ায় তারা সকাল-বিকাল শামুক কুড়ানোর কাজ করে তারা। ঘের মালিকের প্রতিনিধিরা দু-একজন শামুক সংগ্রহকারীদের সঙ্গে নিয়ে সারাদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শামুক সংগ্রহ করে থাকে। এই ফরিয়ারা শামুক কিনে বাগেরহাট, খুলনা সহ বিভিন্ন মোকাম ও মাছের ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি করে। এভাবে বর্ষার শুরুতে আষাঢ় মাস থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত চলে শামুক কেনাবেচা। শামুক আহরনকারী ও ফরিয়াদের দাদন দিয়ে থাকে ঘের মালিক ও মোকামের মালিকেরা। অনেক শামুক সংগ্রহ কারী বিভিন্ন মানুষ জানান তারা এভাবে শামুক কুড়িয়ে প্রতিদিন ৯০ থেকে ১১০ পর্যন্ত আয় করেন। আগে যেখানে দিনে এক নৌকা শামুক সংগ্রহ করা যেত এখন সেখানে মাত্র ১০-১৫ কেজি শামুক সংগ্রহ করাই কঠিন হয়ে যায়। কৃষিজমি ও জলাভূমিতে আগের মত অহরহ শামুক দেখা যায় না। শামুক ব্যবসায়ীরা জানান, তৈরী ফিস ফিডের তুলনায় মাছের বৃদ্ধিতে শামুক বেশ সহায়ক এবং মূল্যের দিক থেকে ও শামুক অনেক সস্তায় পাওয়া যায়। শামুবের উপকারিতা স¤পর্কে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ জানান শামুক আমাদের ফসলের পোকামাকড় খেয়ে আমাদের ফসলকে সঠিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এ জন্য শামুককে নিধন না করে এর যথাযথ সংরক্ষন ও চাষ করা খুবই গুরুত্বপূর্ন বলে মনে করেন।