প্রতিবছর ঈদে দুর্ভোগের ঈদ আনন্দ যাত্রায় রাস্তায় একসাথে নামেন লাখো মানুষ। কেউ সড়ক পথে, কেউ রেলপথে আবার কেউ নৌ-পথে যাত্রা শুরু করে পরিবার পরিজন নিয়ে। বেসরকারী যাত্রী অধিকার প্রতিষ্ঠায় কর্মরত সংগঠন “বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির” পর্যবেক্ষণ মতে এবারের ঈদে ঢাকা থেকে ৬৫ লাখ, চট্টগ্রাম থেকে ২১ লাখ, সিলেট থেকে ৪ লাখ, খুলনা থেকে ৯ লাখ, রাজশাহী থেকে ৭ লাখ যাত্রী দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করবে। এছাড়াও একজেলা থেকে অপর জেলায় যাতায়াত করবে আরো প্রায় ৪ কোটি ২২ লাখ যাত্রী। নাড়ীর টানে প্রিয়জনের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করার এই যাত্রায় এসব যাত্রীদের প্রায় প্রত্যেককে কোন না কোন ভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এখন বাস, রিক্সা, অটোরিক্সা কিংবা লঞ্চ বা নৌকা সব পথে ঈদ বকশিস বা ঈদ ভাড়া নৈরাজ্য চলছে সমানতালে। কেউ ভদ্রোচিতভাবে কেউ বা চার্ট টাঙ্গিয়ে দেদারসে আদায় করছে অতিরিক্ত ভাড়া। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মহামান্য সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে সরকারের উপর নির্দেশনা রয়েছে। একই নির্দেশনায় গাড়ীতে ও বাস কাউন্টারে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা ঝুলিয়ে রাখার আদেশও রয়েছে সংশি¬ষ্টদের উপর। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কি কি ব্যবস্থা নেয়া হলো প্রতি ৩ মাস পরপর আদালতকে একটি প্রতিবেদনও দেয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। এতকিছুর পরও দিন দুপুর অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে দুরপাল¬ার বাস ও লঞ্চ গুলো। বিভিন্ন অখ্যাত অপরিচিত কোম্পানীর বাসগুলো পাল¬া দিয়ে ভাড়া নৈরাজ্য করলেও নামী দামী কোম্পানীর সুনাম সুখ্যাতিও এক্ষেত্রে নষ্ট হচ্ছে।
এবার বর্ষায় দেশে প্রায় ১২০০ কিঃ মিঃ মহাসড়ক দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব মহাসড়কের উপর বসানো হয়েছে ১৮৭ টি পশুর হাট। মহাসড়ক জুড়ে কোথাও কোথাও ঈদে বাজারও বসেছে। এসব অপসারণের জন্য বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে দাবী তোলা হলেও শেষ পর্যন্ত তা অপসারণ হয়নি। দুর্ভোগের ঈদ যাত্রায় এ হাট বাজারগুলো কলংকতিলক হয়ে রইল দুর্ভোগের গনঘটা হয়ে।
ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের চারলেনের নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে এই সড়কটি এখন সারাদেশের যাত্রীদের জন্য ঈদ যাত্রার শংকার প্রধান কারণ। এ সড়কে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১.১৫ ঘটিকায় চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা করে পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ১.১০ ঘটিকায় ঢাকায় পৌঁছি। ঈদের দীর্ঘ ১ সপ্তাহ আগে ১৪/১৫ ঘন্টায় এ পথে যাতায়াত করতে হয়েছে মাত্র ৫/৬ ঘন্টার যাত্রাপথে। এ সড়কের বেশ কিছু অংশে উভয় পার্শ্বে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও কিছু কিছু অংশে এক পাশে কাজ চলমান অপর পাশ দিয়ে উভয়মুখী যান চলাচল করছে। এসব যানবাহন রাস্তার নির্মানাধীন পাশ থেকে অপর পার্শ্বে যাতায়াতের যে সব লুপ রয়েছে সেসব লুপে কোন একটি অংশে একটি যানবাহন নষ্ট হলে পেছনে ২০-৩০ কিলোমিটার কখনো কখনো ৪০-৫০ কিলোমিটার যানজট আমরা প্রায়শ লক্ষ্য করি। কিন্তু ঈদ যাত্রায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে শত শত পশুবাহী ট্রাক। পুরনো লক্ড়-ঝক্কড় এসব ট্রাকের পাশাপাশি সিটি সার্ভিসের ফিটনেসবিহিন লক্কড়-ঝক্কড় বাসও এসব মহাসড়কে নষ্ট হলে ভোগান্তি বাড়াবে ঈদযাত্রার যাত্রীদের।
শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক নয়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কেও একই অবস্থা। এখানে রাস্তার উপর বসানো হাট বাজার, পশুর বাজার, বাস কাউন্টারগুলো যাত্রাপথে ভোগান্তির কারণ। অথচ সামান্য সফল উদ্যোগে এটি সমাধানযোগ্য। পাটুরিয়া-দৌলদিয়া ফেরীঘাট, মাওয়া-
কাওড়াকান্দি ফেরীঘাটে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে সারাদেশের সড়ক পথে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। শুধু সড়ক পথে নয় রেল পথেও এবারের ঈদে শংকার অনেক কারণ বিরাজমান।
নিয়মিত সময়ে প্রতিদিনইতো ট্রেন দূর্ঘটনা, লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটছে। রেলে ৯০ ভাগ সেতু, ৬৮ ভাগ লোকমোটিভ, ৮০ ভাগ কোচ মেয়াদ উত্তীর্ণ, সংস্কারবিহীন এসব রেলপথে প্রায়শ লাইনচ্যুতি, দূর্ঘটনা ঘটছে। বর্তমানে ১৭০ টির বেশি রেল ষ্টেশান বন্ধ রয়েছে। এত সংকটের মধ্যেও এবারের ঈদে বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রতিদিন ২ লক্ষ ৫০ হাজার যাত্রী সারাদেশে পরিবহনের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এবারের রেলওয়ের প্রচেষ্টা একটু ভিন্নতর মনে হয়েছে। শুরু থেকে টিকিট কালোবাজারি ও দালাল মুক্তভাবে টিকিট প্রদানের তৎপরতা থাকলেও যাত্রীদের নানা ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। রেলে এখন ১ লক্ষ ৬৫ হাজার কোটি টাকার নানা প্রকল্প চলমান। কিন্তু টিকিটের জন্য দিবা-রাত্রি যারা ফ্লাটফরমে কাটিয়েছে তাদের জন্য একটি ফ্যানের ব্যবস্থ্ াকরতে পারেননি রেল কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, সেদিন ঈদের টিকিট সংগ্রহ করতে গিয়ে বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাটিয়েছি কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশান ম্যানেজারের রুমে। এ রুমে যাত্রীদের বসার জন্য মাত্র ৪টি চেয়ারের মধ্যে একটি প¬াস্টিক চেয়ার ভাঙ্গা, মাঝে মধ্যে কোন যাত্রী এ চেয়ারে এসে বসলে হেলে পড়ে যাবে ফ্লোরে। কোমড় ভাঙছে যাত্রীদের।
ঈদ যাত্রায় সবচেয়ে বেশি যাত্রী বহন করে নৌ-পথ। মাননীয় নৌ-পরিবহন মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই দেশের যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এবারের ঈদে প্রথমবারের মতো লঞ্চের অগ্রিম টিকিটের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বরাবরের মতো এবারের ঈদেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। নৌপথে এমনিতেই সড়ক রেলপথের চেয়ে ভাড়া বেশী। তবুও ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি ধারণক্ষমতার তিন-চারগুণ অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে থাকে। লাভের উপর লাভ, যেন ত্রিপল লাভ। তবুও লঞ্চ মালিকদের পেট ভরে না। তারা বার বার ভাড়া বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে সরকারকে চাপ দিতে থাকে। বিভিন্ন সভায় সরকারকে জিম্মি করে দাবি আদায়ে মরিয়া হয়ে উঠে। এপথে ধারণক্ষমতার ৩/৪ গুণ অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে যাত্রীরা হয়ে যায় চিড়ে চেপ্টা। তাদের নূন্যতম বসা বা শোয়ার জায়গাটুকু হয় না। তারপরও অতিরিক্ত ভাড়া মেনে নেওয়া যায় না।
দেশের সড়ক, রেল, নৌ-পথের যাত্রী সাধারণ শুধু অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের শিকার হচ্ছে তা নয়। রাস্তায় যাত্রা পথে টয়লেট ব্যবহার, প্রতিবন্ধী যাত্রীদের ক্রেচ ব্যবহার, যাত্রাবিরতি হোটেলে খাদ্য দ্রব্যের মূল্য সন্ত্রাস, এমনকি কোন কোন গাড়ী নির্দিষ্ট গন্তব্যের পরিবর্তে মাঝপথে বা এখানে সেখানে নামিয়ে দিয়ে যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। এসব যাত্রীরা মাঝরাতে বা শেষরাতে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ রোগী নিয়ে বিপাকে পড়ছে। যাত্রী নামক এদেশের নাগরিকগণ দুর্ভোগে পড়লে যেমন রাস্তাঘাটে কাউকে সাহায্যকারী হিসেবে পায় না, সরকারের যাত্রী সেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সভা সমূহেও যাত্রী প্রতিনিধি রাখা হয় না। তাই রাস্তাঘাটের দুর্ভোগের চিত্র সরকারের কানেও পৌঁছায় না। যাত্রী নামক নাগরিকগণ যেন রাস্তায় নামলে শরণার্থী হিসেবে পরিগণিত হয়। এক দেশের শরণার্থী অন্যদেশে প্রবেশ করলে তাদের তাদের যেমন কোন নাগরিক অধিকার থাকে না এদেশেও যাত্রী নামক নাগরিকগণ কোন অধিকার পায় না
কাওড়াকান্দি ফেরীঘাটে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে সারাদেশের সড়ক পথে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। শুধু সড়ক পথে নয় রেল পথেও এবারের ঈদে শংকার অনেক কারণ বিরাজমান।
নিয়মিত সময়ে প্রতিদিনইতো ট্রেন দূর্ঘটনা, লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটছে। রেলে ৯০ ভাগ সেতু, ৬৮ ভাগ লোকমোটিভ, ৮০ ভাগ কোচ মেয়াদ উত্তীর্ণ, সংস্কারবিহীন এসব রেলপথে প্রায়শ লাইনচ্যুতি, দূর্ঘটনা ঘটছে। বর্তমানে ১৭০ টির বেশি রেল ষ্টেশান বন্ধ রয়েছে। এত সংকটের মধ্যেও এবারের ঈদে বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রতিদিন ২ লক্ষ ৫০ হাজার যাত্রী সারাদেশে পরিবহনের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এবারের রেলওয়ের প্রচেষ্টা একটু ভিন্নতর মনে হয়েছে। শুরু থেকে টিকিট কালোবাজারি ও দালাল মুক্তভাবে টিকিট প্রদানের তৎপরতা থাকলেও যাত্রীদের নানা ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। রেলে এখন ১ লক্ষ ৬৫ হাজার কোটি টাকার নানা প্রকল্প চলমান। কিন্তু টিকিটের জন্য দিবা-রাত্রি যারা ফ্লাটফরমে কাটিয়েছে তাদের জন্য একটি ফ্যানের ব্যবস্থ্ াকরতে পারেননি রেল কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, সেদিন ঈদের টিকিট সংগ্রহ করতে গিয়ে বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাটিয়েছি কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশান ম্যানেজারের রুমে। এ রুমে যাত্রীদের বসার জন্য মাত্র ৪টি চেয়ারের মধ্যে একটি প¬াস্টিক চেয়ার ভাঙ্গা, মাঝে মধ্যে কোন যাত্রী এ চেয়ারে এসে বসলে হেলে পড়ে যাবে ফ্লোরে। কোমড় ভাঙছে যাত্রীদের।
ঈদ যাত্রায় সবচেয়ে বেশি যাত্রী বহন করে নৌ-পথ। মাননীয় নৌ-পরিবহন মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই দেশের যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এবারের ঈদে প্রথমবারের মতো লঞ্চের অগ্রিম টিকিটের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বরাবরের মতো এবারের ঈদেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। নৌপথে এমনিতেই সড়ক রেলপথের চেয়ে ভাড়া বেশী। তবুও ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি ধারণক্ষমতার তিন-চারগুণ অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে থাকে। লাভের উপর লাভ, যেন ত্রিপল লাভ। তবুও লঞ্চ মালিকদের পেট ভরে না। তারা বার বার ভাড়া বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে সরকারকে চাপ দিতে থাকে। বিভিন্ন সভায় সরকারকে জিম্মি করে দাবি আদায়ে মরিয়া হয়ে উঠে। এপথে ধারণক্ষমতার ৩/৪ গুণ অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে যাত্রীরা হয়ে যায় চিড়ে চেপ্টা। তাদের নূন্যতম বসা বা শোয়ার জায়গাটুকু হয় না। তারপরও অতিরিক্ত ভাড়া মেনে নেওয়া যায় না।
দেশের সড়ক, রেল, নৌ-পথের যাত্রী সাধারণ শুধু অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের শিকার হচ্ছে তা নয়। রাস্তায় যাত্রা পথে টয়লেট ব্যবহার, প্রতিবন্ধী যাত্রীদের ক্রেচ ব্যবহার, যাত্রাবিরতি হোটেলে খাদ্য দ্রব্যের মূল্য সন্ত্রাস, এমনকি কোন কোন গাড়ী নির্দিষ্ট গন্তব্যের পরিবর্তে মাঝপথে বা এখানে সেখানে নামিয়ে দিয়ে যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। এসব যাত্রীরা মাঝরাতে বা শেষরাতে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ রোগী নিয়ে বিপাকে পড়ছে। যাত্রী নামক এদেশের নাগরিকগণ দুর্ভোগে পড়লে যেমন রাস্তাঘাটে কাউকে সাহায্যকারী হিসেবে পায় না, সরকারের যাত্রী সেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সভা সমূহেও যাত্রী প্রতিনিধি রাখা হয় না। তাই রাস্তাঘাটের দুর্ভোগের চিত্র সরকারের কানেও পৌঁছায় না। যাত্রী নামক নাগরিকগণ যেন রাস্তায় নামলে শরণার্থী হিসেবে পরিগণিত হয়। এক দেশের শরণার্থী অন্যদেশে প্রবেশ করলে তাদের তাদের যেমন কোন নাগরিক অধিকার থাকে না এদেশেও যাত্রী নামক নাগরিকগণ কোন অধিকার পায় না