বাঙলার বাউল সম্রাট ও মরমী সাধক ফকির লালন শাহের ১২৫ তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ করে আজ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ৫ দিনব্যাপী লালন মেলা। কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় সাঁইজির বারাম খানার আখড়াবাড়িতে বসেছে লালনভক্তদের আসর। এ উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় মেলা, আলোচনাসভা ও লালন সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে লালন একাডেমি।
১৮৯০ সালের ১ কার্তিক ফকির লালন শাহ কুষ্টিয়ার শহরতলি কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে মারা যান। এখানে পরবর্তীতে লালন মেলার আয়োজন শুরু করে লালন একাডেমি। এবারে ‘অনুরাগ নইলে কি সাধন হয়’ শিরোনামে শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শুরু হবে। মেলার উদ্বোধন করবেন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ। সুষ্ঠুভাবে আয়োজন সম্পন্ন করতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে থাকবে র্যাব ও সাদা পোষাকে গোয়েন্দা পুলিশ।
এরইমধ্যে লালন শাহের মাজারকে পুরোপুরি সাজানো হয়েছে । আলোক সজ্জা, পরিচ্ছন্নতা, মঞ্চ তৈরিসহ আরো নানা আয়োজন শেষ হয়েছে। সেইসঙ্গে মাজারের ভেতরে বসেছে বাউল ফকিরদের আসর, বাইরে লালন মঞ্চে চলবে আলোচনা সভা। এছাড়া আগত দেশি বিদেশি দর্শনার্থী, সাধক ও আয়োজকদের নিরাপত্তা রক্ষায় নেয়া হয়েছে সার্বিক পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। পাশাপাশি উৎসবকে ঘিরে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় কালিনদীর পাড়ে বসেছে গ্রামীণ মেলা।
এদিকে মূল উৎসব আজ থেকে শুরু হওয়ার ইতিমধ্যেই বাউল সাধকরা মাজারের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। সাঁইজির আধ্যাত্মিক মর্মবাণী ও ভেদ তথ্যের গানের আসর জমিয়েছেন। লালন শাহের আখড়া বাড়ি এখন ভক্ত-অনুরাগীদের পদভারে মুখরিত। বলা যায়, কুষ্টিয়া পরিণত হয়েছে উৎসবের শহরে।
প্রতিবছরই লালন শাহ সাঁইজির তিরোধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত লালন মেলা অংশ নেয় সারাদেশ থেকে আসা হাজার মানুষ। তাই নিরাপত্তা রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানালেন কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম। লালন একাডেমির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, আগত লালন ভক্ত অনুসারীদের খেয়াল রাখা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, দেশ বিদেশের পাঁচ লাখের বেশি মানুষ এখানে আসবেন। প্রতি বছর লালন মেলায় বিদেশি ভক্তরাও আসেন। এবারে তাদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।
এদিকে আয়োজকেরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে লালনভক্তরা ছেঁউড়িয়ায় আসতে শুরু করেছেন। এ ছাড়া কালি নদীর পাড় ঘেঁষে প্রায় দুই শতাধিক অস্থায়ী দোকান বসেছে।
লালন শাহের ১২৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ১৬ অক্টোবর মাঝরাতে অধিবাস কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শুরু হবে ৫ দিনের লালন উৎসবের মূল আয়োজন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় ও কুষ্টিয়া লালন একাডেমির আয়োজনে ইতিমধ্যে আখড়া বাড়িতে সকল প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।