ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে সীমান্তে আটকে পড়া শরণার্থীদের বেশিরভাগকেই ঢুকতে দেয়া হয়েছে বলে স্লোভেনিয়ার সরকার বলেছে। ক্রোয়েশিয়াও তার সীমান্ত খুলে দিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। খবর বিবিসি’র। ব্যাপক ঠাণ্ডা ও বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে প্রায় ৫ হাজারের মতো শরণার্থী সীমান্তে আটকে পড়েছিলেন। বিশেষ করে স্লোভেনিয়ার সীমান্তে তারা আটকে পড়েন। ঠাণ্ডার কারণে শরণার্থীদের দুর্ভোগের এক করুন দৃশ্য তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তে কড়াকড়ি শিথিল করলো স্লোভেনিয়া ও ক্রোয়েশিয়া। তবে এখনো নিরুপায় বহু শরণার্থী সীমান্তে রয়েছে। সিরিয়া থেকে আসা এক নারী বলছিলেন তিনি খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন। তাদের সঙ্গে পশুর মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন হাজার হাজার শরণার্থীর বেশির ভাগই আসছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে। আফ্রিকার কয়েকটি দেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আসা মানুষজনও রয়েছেন। যারা মূলত তুরস্ক হয়ে তারপর বলকান দেশগুলো পার হয়ে জার্মানি ও সুইডেন যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যেই ক্রোয়েশিয়া দুই ট্রেন ভর্তি শরণার্থীদের স্লোভেনিয়ার সীমান্তে পাঠিয়ে দেয়। সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করে স্লোভেনিয়া। হাঙ্গেরি দক্ষিণের সীমানা বন্ধ করে দেয়। কে কত শরণার্থী নেবে সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা হচ্ছে বলে বলকান দেশগুলো একে অপরকে দোষারোপ করছে। স্লোভেনিয়ার সরকার এক্ষেত্রে মূলত ক্রোয়েশিয়াকে দোষারোপ করছে। স্লোভেনিয়ার সরকারি দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট পার্টির একজন নেতা তানিয়া ফেয়ন বলেছেন, শরণার্থীদের প্রবেশে সমন্বয় আনতে আলাপ চলছে। মিজ ফেয়ন বলেছেন, যত মানুষ সীমান্তে আসছেন তাদের সবাইকে সামাল দেয়া স্লোভেনিয়ার পক্ষে সম্ভব নয়। ক্রোয়েশিয়া বলছে তাদের অবস্থা আরও খারাপ। ওদিকে ইওরোপে ঘনিয়ে আসছে ঠাণ্ডার মৌসুম। সীমান্তে কড়াকড়ি অব্যাহত থাকলে শরণার্থীদের দুরবস্থা চরমে পৌঁছতে পারে বলে সতর্ক বার্তা দিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটির একজন মুখপাত্র ইরোদা আস্কারোভা বলছেন, শরণার্থীদের তারা সাহায্য করছেন তবে সীমান্তে কড়াকড়ি থাকলে তা যথেষ্ট হবে না। সীমান্তে আসা শরণার্থীদের সংখ্যা কত তার হিসেব নেবার চেষ্টা চলছে। তাদের কম্বল, খাবার ও পানি দিয়ে সাহায্য করা হচ্ছে। বহু শরণার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, সবমিলিয়ে এক মানবিক বিপর্যয় তৈরি হতে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেই এ বছর ৬ লাখের মতো শরণার্থী ইওরোপ প্রবেশ করে।