ইলিয়াছ মাহমুদ ॥ ‘মোদের গরব মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা’, এ গানটি বাঙ্গালির ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের সাথে মিশে আছে। এ কালজয়ী গানের সুরকার ও গীতিকার অতুল প্রসাদ সেনের আজ জন্ম বার্ষিকী। গুনি এ শিল্পীর স্মৃতি কেউ স্মরন করেনা। এ শিল্পীর প্রতি যথাযথ সম্মান জানানোর জন্য সরকারি উদ্যোগে তার জন্মদিন পালনের দাবি জানিয়েছেন তার গ্রামের মানুষ। ১৮৭১ সালের ২০ অক্টোবর অতুল প্রসাদ সেন জন্ম গ্রহন করেন। আর ১৯৩৪ সালের ২৬ আগষ্ট পরলোক গমন করেন। অতুল প্রসাদ সেনের পিতৃ নিবাস শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মগর গ্রামে। ১৯২৭ সালে মগর এলাকায় অতুল প্রসাদ সেনের জেষ্ঠ্য (বাবার বড় ভাই) গুরুপ্রসাদ সেন ও বাবা রামপ্রসাদ সেনের নামে “পঞ্চপল্লী গুরুরাম উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। অতুল প্রসাদ সেন গ্রামের বাড়িতে আসলে যে ঘরটিতে বসবাস করতেন সেই ঘরে শফিকুল ইসলাম নান্নু মুন্সি নামে এক ব্যক্তি বসবাস করছেন। অতুল প্রসাদ সেনের সাড়ে তিন একর জায়গার বাগান বাড়িটিতে শফিকুল ইসলাম মুন্সিরা চার ভাই বসবাস করছেন। শফিকুল ইসলাম মুন্সি বলেন, মহসিন মুন্সি নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে আমার বাবা ১৯৬৪ সালে এ বাড়িটি ক্রয় করেছেন। এর পর থেকে আমারা এখানে বসবাস করছি। অতুল প্রসাদ সেনের ঘরটি আমরা ভাঙ্গিনি। মেরামত করে সেখানে বসবাস করছি। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাসের উদ্যোগে অতুল প্রসাদ সেনের প্রতিষ্ঠিত পঞ্চপল্লী গুরুরাম উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি ম্যুরাল নির্মান করা হচ্ছে। ম্যুরালটির নির্মান কাজ চলছে। নড়িয়া উপজেলার মগর গ্রামের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক সুভাষ লোধরায় বলেন, অতুল প্রসাদ সেনের অমর সৃষ্টি ‘মোদের গরব মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা’, এ গানটি প্রতিটি বাঙ্গালির অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে। মহান এ শিল্পীর কোন স্মৃতি সংরক্ষনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সরকারি উদ্যোগে তার জন্ম বার্ষিকী পাল করা হউক এটা আমাদের প্রানের দাবী। নড়িয়া উপজেলার বিঝারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অতুল প্রসাদ সেন আমাদের এলাকার কৃতি সন্তান। কৃর্তিমান এ শিল্পীর মর্যাদা আমরা রাখতে পারিনি। এলাকার মানুষের দাবী সরকারি ভাবে তার স্মৃতি সংরক্ষন করা হউক, তার জন্ম বার্ষিকীতে মেলার আয়োজন করা হউক। তার বসত ঘরটিকে সংরক্ষন করার জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছি। পঞ্চপল্লী গুরুরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম চন্দ্র দাস বলেন, অতুল প্রসাদ সেন এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছেন। বিদ্যালয়ে তার কিছু বই ও একটি ছবি রয়েছে। তাকে স্মরন করার জন্য কখনও কোন অনুষ্ঠান হয়নি। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাসের উদ্যোগে বিদ্যালয়ের মাঠে অতুল প্রসাদ সেনের একটি ম্যুরাল নির্মান করা হচ্ছে। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাস বলেন, অতুল প্রসাদের প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয় ও বাড়ি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তার স্মৃতি মানুষ প্রায় ভুলতে বসেছে। তখন বিদ্যালয়ে একটি ম্যুরাল নির্মানের সিদ্ধান্ত নেই। এটি নির্মান শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ মাসের শেষের দিকে ম্যুরালটি সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুরের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।