প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা ও তিন লেখক-প্রকাশককে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে সারাদেশে পুস্তক ও প্রকাশনী সংস্থা অর্ধদিবস ধর্মঘট পালন করেছে। পাশাপাশি মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের রিপোর্টে-
শাবি প্রতিনিধি জানান, প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা ও তিন লেখক-প্রকাশককে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে মিছিল-সমাবেশ করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক শিক্ষার্থীরা একই সঙ্গে সারা দেশে প্রগতিশীল লেখক, ব্লগার ও প্রকাশকদের উপর মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীর নৃশংস হামলা ও হত্যার প্রতিবাদও জানায়। হত্যা ও হামলার প্রতিবাদে সোমবার দুপুর ১২টায় ‘বিক্ষুব্ধ শাবিপ্রবি পরিবার’ ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে থেকে মিছিল শুরু করেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস বিভোর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন ভিসি অধ্যাপক আমিনুল হক ভূঁইয়া, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক রাশেদ তালুকদার, প্রক্টর অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক হিমাদ্রী শেখর রায়, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা সিদ্দিকা, একই বিভাগের প্রভাষক সরকার সোহেল রানা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপু কুমার দাস প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, লেখক ও প্রকাশককে হত্যা করে মুক্তবুদ্ধির চর্চা রুদ্ধ করা যাবে না। অবিলম্বে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার এবং লেখক ও প্রকাশকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি তারা জোর দাবি জানান।
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে জানান, জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা, কবি তারেক রহিম, শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ টুটুল ও লেখক রণদীপম বসুর ওপর হামলার প্রতিবাদে খুলনায় অর্ধদিবস ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে খুলনা পুস্তক প্রকাশক ও ব্যবসায়ী সমিতি।
সকাল ৬টা থেকে খুলনা মহানগরীর সব পুস্তক ও প্রকাশনী সংস্থা বন্ধ রেখে ধর্মঘট শুরু করে ব্যবসায়ী সমিতি। দুপুর ১২টায় মৌন মিছিল করে জেলা প্রশাসকের কাছে জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যাকারী এবং কবি তারেক রহিম, শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ টুটুল ও লেখক রণদীপম বসুর ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি দেন তারা।
এ সময় নেতারা বলেন, একের পর এক মুক্তমনা লেখক ও প্রকাশককে হত্যা ও হামলার ঘটনায় সবাই আতঙ্কিত ও ভীত হয়ে পড়েছেন। খুলনার প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতারা চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রতন কুমার দেবনাথ, জেলা পুস্তক প্রকাশক ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন বাবুল, সহসভাপতি মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।
স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে জানান, প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপক হত্যার প্রতিবাদে রংপুরে পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতি আধাবেলা দোকাটপাট বন্ধ রেখে বিক্ষাভ করে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে। স্মারকলিপিতে রংপুর পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতি দীপক হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। তা না হলে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড আরও বেড়ে যাবে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে বেলা দুটা পর্যন্ত শহরের শতাধিক বইয়ের দোকান বন্ধ রাখা হয়। এরপর ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যায়। সেখানে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এ কে এম সামসুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রুহুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ স্বপন রায়।