একজন নৃত্যশিল্পী, একজন অভিনেত্রী। দুই ক্ষেত্রেই বেশ পারদর্শী চাঁদনী। তবে অভিনেত্রীর চেয়ে নৃত্যশিল্পী হিসেবেই পরিচয় দিতে বেশি সাচ্ছ্যন্দ্যবোধ করেন তিনি। টিভি মাধ্যমে নাচ ও অভিনয়ের জন্য বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন এ পর্দ্যাকন্যা। শুধু তাই নয়। ছোটপর্দার পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও রয়েছে তার বিচরণ। করেছেন একাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয়। সে দৌঁড়ে সফলও হয়েছেন এ তারকা। আর সেটা প্রমাণ মিলেছে ‘লালসালু’ ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে। বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আজকের ‘আলাপন’-এ কথা বলেছেন চাঁদনী। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মারুফ কিবরিয়া
কেমন আছেন?
খুবই ব্যস্ত। তবে ভালো আছি। এখন রিহার্স্যালে আছি (সাক্ষাৎকারটি নেয়ার সময়)। নাচের প্র্যাকটিস করছি।
সামনে কি কোনো শো আছে?
২১ তারিখ একটি নাচের শো আছে। সে জন্য খুবই ব্যস্ত আছি। প্রতিদিনই রিহার্স্যাল করছি। এরপর আরও কয়েকটি শো-এর কথা রয়েছে। সবমিলিয়ে নাচের ব্যস্ততা বেশি যাচ্ছে।
নাটকে তো অভিনয় করছেন?
দুটি ধারাবাহিকের কাজ করছি। একটি হলো ‘দাগ’ এবং অন্যটি ‘হাউসওয়াইভস’। দুটি নাটকই এখন প্রচার চলছে। এ মূহুর্তে আসলে নাটকের কাজ খুব একটা করছি না।
কমিয়ে করছেন কেন?
নাচের শোগুলো কিছুদিন পর পরই থাকে। যে কারণে টিভি নাটকে কাজ কমিয়ে করছি। সুযোগ হলে আবার সেদিকেও সময় দিচ্ছি। মোট কথা যখন যেখানে সময় দেয়ার দরকার সেভাবেই দিচ্ছি।
বিজ্ঞাপন কিংবা উপস্থাপনার কোনো কাজ করছেন?
এ মুহূর্তে সে ধরনের কোনো ব্যস্ততাই নেই। মানুষ তো একজন। এতদিকে সময় দেব কি করে। নাচের পাশাপাশি যতটা সময় পাই অভিনয়ে মনোনিবেশ করি। তাই মডেলিং কিংবা টেলিভিশনের কোনো অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছি না।
টিভি মাধ্যমে নৃত্যশিল্প অবহেলিত বলে অনেকে বলেন। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কি?
আসলে টিভি চ্যানেলগুলোতে তো নাচের অনুষ্ঠান এখন কমে গেছে। আগে একটা সময় ছিল নিয়মিত নাচের অনুষ্ঠান হতো। কিন্তু এখন সে তুলনায় কমই বলা চলে। বিশেষ দিনগুলোতে নাচের অনুষ্ঠান প্রচার হয়। আর বিশেষ করে স্পন্সর না পাওয়ায় নৃত্যানুষ্ঠান নির্মাণ হচ্ছে না।
এখনকার টিভি নাটক নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?
আসলে আমি টিভি দেখার সময় পাই না। যতটুকু পাই, সেটা সাংসারিক কাজে চলে যায়। তবে যতটুকু বুঝি, আমার কাজ দিয়ে। আমি যে নাটকগুলোতে কাজ করছি সেগুলোর গল্প ও চরিত্র মানসম্মত। আর দর্শক সাড়াও পাচ্ছি বেশ। তাই এদিক থেকে বলবো নাটকের মান ভালো। আর সার্বিক অর্থে, ঈদের সময় কোনো নাটক দেখতে বসলে বোঝা যায় কোন নাটকটি ভালো কিংবা খারাপ। তখন কিছু ব্যাপার নিজেই ধরতে পারি। ধরা যাক, যে নাটকটি ঈদের মুহূর্তে প্রচার করা দরকার ছিলো সেটা করা হচ্ছে না। উল্টোটা হচ্ছে। আর সব মিলিয়ে বলতে পারি, ভালো কাজের পাশাপাশি খারাপটাও হচ্ছে। আর এখন তো চ্যানেল বেশি। সে জায়গায় প্রতিযোগিতাও বেড়েছে। এত কাজের মাঝে ভালো খারাপ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সেসঙ্গে কিছু সমস্যাও আছে। তার মধ্যে বাজেট অন্যতম। নাটকে বাজেট কমে গেছে।
নতুনদের কেমন লাগছে?
এ সময় যারা মিডিয়াতে আসছেন সবাই খুবই ভালো। অনেকে চর্চার জায়গাটা বোঝেন। তাদের মধ্যে শেখার মানসিকতা রয়েছে। আর নিজেকে টিকিয়ে রাখার প্রত্যয়ে ভালো কাজটা করছেন। সেখানে সফলও হচ্ছেন অনেকে। নতুন এ শিল্পীদের নিয়ে আমি বেশ আশাবাদী।
শুনলাম বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে আপনার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। বিষয়টি সত্যি নাকি?
ছাড়াছাড়ি হলে তো সবাই জানতেন। আমরা এখনও একসঙ্গে আছি। ভালো আছি। কিছু অনলাইন সংবাদ মাধ্যম নিজেদের প্রচারণার জন্য শিল্পীদের নিয়ে গুজব রটায়। আর সেটা যে একটা মানুষ ও তার পরিবার এমনকি সমাজের ওপর কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে সেটা তারা বোঝে না। একটা কথা সবার উদ্দেশ্যে বলে রাখা ভালো। আমার যদি কখনো ডিভোর্স হয় সেটা সবাইকে জানিয়ে করবো। প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করে জানাবো। আমি কোনো কিছু নিয়ে লুকোচুরি করি না।
তাহলে তো সংসার জীবন ভালোই যাচ্ছে…
অবশ্যই ভালো কাটছে। আমি আমার কাজ আর সংসার নিয়ে বেশ ভালো আছি। সুখে আছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।