বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশ ভারত। মানুষ ১৩০ কোটি। কিন্তু অলিম্পিকে তাদের সাফল্য নেই বললেই চলে। চলতি রিও-অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট বৃটেন, চীন, জাপান যখন রাশি রাশি সোনা-রূপা জিতছে তখন ভারত ছিল একেবারে শূন্য। জিমন্যাস্টিক্সে ভারতের বাঙালি মেয়ে দীপা কর্মকার মাত্র দশমিক ব্যবধানে পদক থেকে বঞ্চিত হন। ভারতকে হতাশ করে বিদায় নেন গগন নারঙ্গ, লিয়েন্ডার পেজ, সানিয়া মির্জা ও সাইনা নেহওয়ালরা। কিন্তু অবশেষে তাদের একটি পদকের অপেক্ষা ফুরালো। নাম উঠলো পদক তালিকায়। রিও-অলিম্পিকে ভারতকে প্রথম পদক এনে দিলেন হরিয়ানার মেয়ে সাক্ষী মালিক। ফ্রিস্টাইল কুস্তির ৫৮ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতলেন ২৩ বছর বয়সী এ যুবা। কুস্তিতে ভারতের প্রথম নারী হিসেবে অলিম্পিকে পদক জিতে ইতিহাসে নাম লেখালেন তিনি। অলিম্পিকে ভারতের নারীদের সাফল্য তেমন নয়। এর আগে মাত্র তিনজন নারী অলিম্পিকে পদক জিতেছেন। চারটিই ব্রোঞ্জ পদক। ভারোত্তোলনে কর্ণম মালেশ্বরী, বক্সিংয়ে মেরি কম ও শাটলারে সাইনা নেহওয়াল পদক জিতেছেন। সাক্ষী মালিক এবার ইতিহাস হলেন কিরগিজস্তানের আইসুলুন তাইনাইবেকোভাকে হারিয়ে। চলতি আসরে ভারতকে প্রথম পদক নিশ্চিত করার পর আনন্দে কেঁদে ফেলেন সাক্ষী। দৌড়ে ভারত থেকে ব্রাজিলে যাওয়া কর্মকর্তাদের বুকে লাফিয়ে ওঠেন। পদক গ্রহণের মঞ্চেও যারপরনাই উচ্ছ্বসিত তিনি। সেখানে দাঁড়িয়ে পদকে কামড় বসালেন অশ্রুসিক্ত নয়নে। আর পরে সাংবাদিকদের সামনে হিন্দিতে অনর্গল নিজের মনের কথাগুলো বলে ফেলেন- ‘আমার ১২ বছরের প্রচেষ্টার ফল পেলাম। কোনোদিনই ভাবতে পারিনি, ভারতের প্রথম নারী হিসেবে অলিম্পিকে পদক জিততে পারবো। আশা করছি ভারতের অন্য কুস্তিগীররাও অনেক ভালো করবে। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে আবেগঘন ও আনন্দের মুহূর্ত। এতদিন এই দিনটার স্বপ্ন দেখেছি, কল্পনা করেছি। দেশকে প্রথম পদক এনে দিতে পেরে আমি অনেক খুশি।’ এমন কীর্তিতে প্রশংসায় ভাসছেন সাক্ষী মালিক। দেশটির অভিনেতা, ক্রীড়াবিদ থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদরা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সাবেক ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার ও অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন টুইটারে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।