আগের দিনে আজকের মতো এতো সহজে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারতেন না হাজীরা। তখন তাদেরকে অনেক প্রতিকূলতা অতিক্রম করে পালন করতে হতো হজ। বেশির ভাগ সড়ক ছিল কঙ্করযুক্ত বালুময়। মাঝে মধ্যেই মরুভূমিতে ডাকাতের আক্রমণে পড়তে হতো তাদের। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লিখেছেন রাশিয়ান লেখক এফিম রেজভান। এক সময় রাশিয়া হজে পাঠিয়েছিল তাদের একজন গোয়েন্দা। তিনি ছিলেন মুসলিম। তার নাম আবদুল আজিজ দেভলেতশিন। তার কাছ থেকে পুরনো দিনের সত্যিকার কাহিনী নিয়ে বইটি লিখেছেন এফিম রেজভান। এর নাম ‘হজÑ হান্ড্রেড ইয়ার্স এগো’। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। এতে বলা হয়েছিল, আবদুল আজিজ ছিলেন রাশিয়ান কর্মকর্তা। তাকে গোপনে গোয়েন্দা সাজিয়ে পাঠানো হয়েছিল হজে। তিনি হজের কাহিনী লিখে রেখেছিলেন। তা ছাড়া তার স্মৃতিতে ছিল অনেক সত্যিকার ঘটনা। সেগুলো সংগ্রহ করেই লেখা হয়েছে বইটি। এতে ওই সময়ে সামরিক ঘাঁটিগুলো, নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা, জনজীবন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ওই সময়ের মসজিদ সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য রয়েছে। এতে বর্ণনা করা হয়েছে মক্কা, পবিত্র শহর তায়েফ, ইয়ানবু ও মদিনা নিয়ে আবদুল আজিজের পর্যবেক্ষণ। বইটি ৩৫২ পৃষ্ঠার। এতে রয়েছে ইতিহাস, ভৌগোলিক অবস্থা, রাজনীতি, সমাজজীবন ও প্রশাসনের কথা। ১৯৯৪ সালে বইটি প্রকাশিত হয় বৈরুত থেকে। এখন এটি আরবি ভাষায়ও পাওয়া যাচ্ছে। উল্লেখ্য, রাশিয়ান এই গোয়েন্দা পবিত্র হজ পালন করেছেন ১৮৯৮ থেকে ১৮৯৯ সময়কালে। তিনি বর্ণনা করেছেন, তখন মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল কলেরা। এম্বুলেন্সের ভিতরে পর্যন্ত এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এতে মারা যান কমপক্ষে অর্ধেক হজযাত্রী। এই মহামারী ছড়িয়ে পড়ে পাশ্ববর্তী বেদুইন এলাকাগুলোতে। তখন মরুভূমিতে যাযাবররা হজযাত্রীদের জিনিসপত্র লুট করে নিতো। তারা হামলা চালাতো হজযাত্রীদের বহরে। কোনো কোনো গোত্র তাদের এলাকার ভিতর দিয়ে লোকজন চলাচল ঠেকাতে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতো। ওই সময়ে মক্কা থেকে জেদ্দা, মক্কা থেকে মদিনার সড়ক যোগাযোগ ছিল নাজুক। আবদুল আজিজ বলেছেন, সেখানে সব সড়কের অবস্থা ছিল কঙ্করযুক্ত বালুময়। সব জায়গায় ছিল পাথর। সংকীর্ণ সড়ক ও ক্রসিং ছিল পাথরময়। এতে চলাচল হয়ে যেতো খুব কঠিন।