যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, হোয়াইট হাউজে প্রথম দিনেই তিনি ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) বাণিজ্য চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেবেন। আজ এক ভিডিও বার্তায় এই ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব¡ নিতে যাচ্ছেন। দায়িত্ব নিয়ে প্রথমেই তিনি কী করবেন, ভিডিও বার্তায় সেই ধারণা দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রহ এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১২টি দেশ বহুল বিতর্কিত টিপিপি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তিতে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধার কথা উল্লেখ রয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার পর ২০১৫ সালে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। তবে তা এখনো অনুসমর্থন করা হয়নি। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ব্রুনাই দারুস সালাম, কানাডা, চিলি, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম। বর্তমান বিশ্ব বাণিজ্যের ৪০ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করে এসব দেশ।
টিপিপি চুক্তির লক্ষ্য অর্থনৈতিক বন্ধন সুদৃঢ় করা ও প্রবৃদ্ধি সমৃদ্ধ করা। যদিও টিপিপির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বড় ধরনের বিরোধিতা রয়েছে। এই চুক্তির যারা বিরোধিতা করেন তাদের মতে, এই চুক্তি থেকে বহুজাতিক বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানই লাভবান হবে। এতে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর ব্যবসা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হবে। ট্রাম্পের টিপিপি বাতিলের ঘোষণায় প্রতিক্রিয়ায় সেন্টার অন এশিয়া এন্ড গ্লোবালাইজেশনের কর্মকর্তা পরাগ খান্না বলেছেন, ‘অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। কিন্তু টিপিপির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র যেটা অর্জন করতে পারতো ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে সেটা হবে না।’ এশিয়ান ট্রেড সেন্টারের ডেবোরাহ এলমস বলেন, ‘খুবই হতাশাজনক খবর। এর অর্থ হলো বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব শেষ হয়ে যাওয়া।’ অর্থনীতিবিদ হারুমি টাগুচি, টিপিপিতে ধ্বস নামা মানে হলো এশিয়াতেও শূন্যতা তৈরি হবে, এ শূন্যতা পূরণের বিষয়ে চীনের সাথে ব্যাপক আলোচনা করা প্রয়োজন।’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধিতা সত্ত্বেও এশিয়া প্যাসিফিকের নেতারা পেরুতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বহাল রাখার বিষয়ে আলোচনা করবেন। তবে সোমবারই জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র যদি টিপিপি বাণিজ্য চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় তাহলে এ চুক্তি অর্থহীন হয়ে পড়েবে।