তামিম ইকবালের চিটাগাং ভাইকিংস চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে দারুণ শুরু করেছিল। কিন্তু এরপর টানা চার হার। ধরেই নেয়া হচ্ছিল শেষ চারে চিটাগাং থাকতেই পারবে না। এমনকি অধিনায়ক তামিমের নিজের মাঠ চট্টগ্রামে গিয়েও হার দিয়ে শুরু করে। সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ১৪৮ রান তাড়া করতে নেমে ১২৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ভাইকিংস। একের পর এক হারে দলের ব্যাটসম্যানদের উপর ভীষণ ক্ষেপে ছিলেন অধিনায়ক। অবশেষে চট্টগ্রামে রাজশাহীকে ১৯ রানে হারিয়ে ফিরে জয়ের ধারায়। সেই শুরু, টানা পাঁচ  জয়ে ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে উঠে এসেছে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা সাকিব আল হাসানের দল ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে নিজ মাঠে হেরেছিল তামিমের দল। এবার সুযোগ এসেছে ঢাকার মাঠে দাপট দেখানোর। জিততে পারলে সমান পয়েন্ট নিয়ে ছুঁয়ে ফেলবে ঢাকাকে আর হারলে ঢাকার শীর্ষস্থান আরো মজবুত হবে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে। আজ মিরপুর শেরে বাংলা মাঠে সন্ধ্যা ৫ টা ৪৫ মিনিটে মুখোমুখি হবে আসরের শক্তিশালী দুই দল। দিনের প্রথম ম্যাচে দুপুর ১ টায় মুখোমুখি হবে মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটান্স।
ঢাকার অন্যতম শক্তি ব্যাটিং। দলের ওপেনার মেহেদী মারুফ ১০ ম্যাচে ২ ফিফটি হাঁকিয়ে ৩০৭ রান করেছেন।  এই আসরে সেরা পাঁচে মারুফের অবস্থান পাঁচ নম্বরে। তার পরেই আছেন তরুণ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ৯ ইনিংসে তার সংগ্রহ ২৬২ রান। দলে রয়েছেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লিজেন্ড কুমার সাঙ্গাকারা। যদিও গত অসরে শীর্ষ রান সংগ্রহকারী এই আসরে তেমন আলো ছড়াতে পারেননি। কিন্তু সাঙ্গাকারা যে ভয়ঙ্কর তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সাকিব আল হাসান, নাসির হোসেনও ব্যাট হাতে দলের জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখছেন। বোলিংয়ে ঢাকা হারিয়েছে ১৫ উইকেট নেয়া সেরা পেসার মোহাম্মদ শহীদকে। তবে তার অভাব পূরণ করেছেন আন্দ্রে রাসেল। স্পিনে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনরা দারুণ করছে। দল হিসেবে পারফরমেন্সটাই ঢাকার সাফল্যের অন্যতম শক্তি।
অন্যদিকে চিটাগাং ভাইকিংসের ব্যাটিং-বোলিং কোনোটাই নিজের শক্তিতে খেলতে পারেনি চার ম্যাচে। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানরা। অধিনায়ক তামিম ইকাবালই ব্যাট হাতে লড়ছিলেন। এ আসরে তিনি হাঁকিয়েছেন ৪টি ফিফটি।
১০ ম্যাচে ৪৮.৮৭ গড়ে ৩৫১ রান করে রয়েছেন ব্যাটসম্যানদের তালিকার শীর্ষে। এই ওপেনারের সঙ্গে এখন যোগ হয়েছেন টি-টোয়েন্টির দানব ক্রিস গেইল। তামিম ও গেইলের ওপেনিং জুটি যে কোনো দলের জন্য আতঙ্কের কারণ। বল হাতে এই আসরে শীর্ষ উইকেট শিকারী ভাইকিংসের আফগান তারকা মো. নবী। এই পর্যন্ত তার শিকার ১৭টি উইকেট। পেসার তাসকিন আহমেদ ভালো শুরু করতে না পারলেও শেষদিকে এসে জ্বলে উঠেছেন। এই আসরে ইনিংসে দ্বিতীয় পাঁচ উইকেট নেয়া বোলারও তিনি। এখন পর্যন্ত তার শিকার ১৫ উইকেট। তামিম ও গেইল যদি বড় রান করে দেন তাহলে নবীর স্পিন ও তাসকিনের পেস আক্রমণ সামলানো ঢাকার জন্য কঠিনই হতে পারে।
আজ দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি খুলনা টাইটান্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দুই দলের জন্য অর্জন দুই রকম। খুলনা জিতলে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে যাবে আরো এক ধাপ। নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের শেষ চারে খেলা। আর কুমিল্লার জন্য আজ ম্যাচটি হতে পারে ফাইনােেলর মতোই। এই আসরে টিকে থাকতে হলে তাদের শেষ দু’টি ম্যাচ জিততেই হবে। তবে গতকাল রাতে যদি বরিশালের বিপক্ষে রাজশাহী জিতে যায় তাহলে কুমিল্লার জন্য এ ম্যাচ হবে শুধুই নিয়ম রক্ষার।