ক্রিস গেইল, কিয়েরন পোলার্ড, সুনীল নারাইন, ডুয়াইন ব্র্যাভোদের মত শীর্ষ তারকারা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়ানডে দলে ফেরার প্রায় দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। ওয়ানডে দলটিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই ফর্মের বিচারে পুরনো ও অভিজ্ঞদের আবারো দলে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ক্যারিবীয় নির্বাচকরা। ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে নবম স্থানে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১৯ বিশ্বকাপে চলতি বছর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ আটে থাকা দলগুলোই সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে। বাকিদের আসতে হবে বাছাইপর্বের বাধা পার করে। ক্রিকেট উইন্ডিজের এখন একটাই লক্ষ্য ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিতব্য ক্রিকেটের এই মেগা আসরে যেভাবেই হোক নিজেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। সরাসরি সম্ভব না হলেও অন্তত বাছাইপর্বে যেন নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা যায় সেই লক্ষ্যে এখন থেকেই কাজ শুরু করেছে ক্যারিবীয় ক্রিকেট বোর্ড।
ইতোমধ্যেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্লেয়ার্স এসোসিয়েশনের সাথে বোর্ড আলোচনায় বসে একটি অস্থায়ী সমাধানে পৌঁছেছে। এ সম্পর্কে ক্রিকেট উইন্ডিজের প্রধান নির্বাহী জনি গ্রেভ বলেছেন, ‘সব পক্ষের বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনা করেই সমঝোতার পথ বেছে নেবার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখানে খেলোয়াড়দের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করে তাদেরকে আরো কিভাবে বোর্ডের কর্মপদ্ধতির সাথে সম্পৃক্ত করা যায় সে ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। এর ফলে দলের জন্য তারা নিজেদের সেরাটা দেবারও তাগিদ অনুভব করবে। আমরা বুঝতে পারছি ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পাওয়া এখন আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য। আইসিসি এখনো বাছাইপর্বের কোন তারিখ নির্ধারণ করেনি। আগামী ছয় মাসে নিজেদের প্রস্তুত করে তোলার আগে আমাদের সামনে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র আটটি ওয়ানডে ম্যাচ রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোকে সামনে রেখে দল নির্বাচনে সেরা খেলোয়াড়দের বেছে নেয়াটা এখন জরুরি।’
সাম্প্রতীক সময়ে বোর্ডের দল নির্বাচনে নীতিগত পদ্ধতি পরিবর্তনের ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়ানডে দলটি মাঠের লড়াইয়ে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। যে সমস্ত খেলোয়াড় ঘরোয়া ৫০ ওভারের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় তাদের মধ্য থেকেই জাতীয় দল নির্বাচন করা হয়। শীর্ষ পর্যায়ের খেলোয়াড়রা যেহেতু বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন টি২০ লীগে অংশ নিয়ে থাকে সে কারণে তাদের পক্ষে অনেক সময় ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া সম্ভব হয় না। এ কারণে জাতীয় দল গঠনেও তাদেরকে বিবেচনা করা হয় না।
তবে চলতি বছর অক্টোবরের মধ্যে পুরুষ ও নারী ক্রিকেটারদের জন্য রেজিষ্ট্রেশন আইন চালু হবার কথা রয়েছে। এর ফলে তিন ধরনের ফর্মেটেই একটি সুস্পষ্ট তালিকা বোর্ডের হাতে থাকবে। বোর্ড সভাপতি ডেভ ক্যামেরুন বলেছেন, ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি একটি খেলোয়াড়ের অবশ্যই থাকতে হবে। রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতি চালু হলে সকলের মধ্যেই বোর্ডের এই সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করার তাগিদ অনুভূত হবে। আমরাও জানতে পারবো কোন খেলোয়াড়কে কোন ধরনের ফর্মেটে খেলানো যাবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বর্তমানে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে শ্রীলংকার থেকে ১০ পয়েন্ট পিছিয়ে নবম স্থানে রয়েছে। কিন্তু আগামী মাসে শুরু হওয়া ইংল্যান্ড সফরের মাধ্যমে তারা এই ব্যবধান কমিয়ে আনতে পারে। অভিজ্ঞ ড্যারেন ব্র্যাভোর নিষেধাজ্ঞাও উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। সে কারণেই সেপ্টেম্বরের ওয়ানডে সিরিজের জন্য পূর্ণাঙ্গ শক্তির ক্যারিবীয় দল ঘোষণায় আর কোন বাধাই থাকলো না।