নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রাজনীতি প্রায় দুই যুগের মত বিএনপির দখলে ছিলো। ২০১৪ সালে সেই দুর্গে হানা দেয় আওয়ামী লীগ। বর্তমানে এ উপজেলার রাজনীতি নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া হয়ে ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

রাস্তা-ঘাট, পোল-কালভার্ট স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণসহ নানামূখী উন্নয়ন কাজ করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ি) আসনের এমপি এইচএম ইব্রাহিম। পাশাপাশি এ উপজেলায় বিপুল উন্নয়ন কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি মো. জাহাঙ্গীর আলম।

বাংলাদেশ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের বাড়ি এ উপজেলায়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে এইচএম ইব্রাহিম, মো. জাহাঙ্গীর আলম ও গোলাম কুদ্দুছ প্রত্যাশী। তিনজনই নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে এখন থেকে তৃণমূল পর্যায়ে উঠোন বৈঠক, কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত হচ্ছেন। আর এতে দলীয় নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এ বিভক্তির কারণে এখানে নেতাকর্মীদের মাঝে গ্রুপিং বিরাজমান।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির জানান, চাটখিলের প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সক্রিয় রয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে এ উপজেলায় যে উন্নয়ন হয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষ নৌকার প্রতি আস্থা ফিরে পেয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিপুল ভোটে জয় লাভ করবেন।

অপরদিকে চাটখিলে বিএনপির অবস্থান শক্তিশালী থাকলেও বর্তমান সময়ে নানা কারণে প্রকাশ্যে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারছেন না দলটির নেতাকর্মীরা। তবে নীরবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভিতরে ভিতরে কাজ করছে বিএনপি।

নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ি) আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন দলের একক প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর আগেও তিনি এ উপজেলায় এমপি ছিলেন। সেই হিসেবে আগে থেকেই নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন তিনি।

চাটখিল উপজেলা বিএনপি সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, চাটখিলে বিএনপির অবস্থান অনেক শক্তিশালী। তাদের দলীয় কর্মসূচিতে পুলিশ বাঁধা দেয়াসহ মিথ্যা মামলায় নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানী করার অভিযোগও তোলেন এ নেতা। তিনি বলেন, সরকার দলের প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে বিএনপির জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে।

চাটখিলে গোপনে গোপনে কাজ করছে জামায়াত। নানা সংকটের মধ্যেও এ উপজেলায় সক্রিয় থাকার চেষ্টায় রয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নির্বাচনী কমিটি করেছে জাতীয় পার্টি। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে জাতীয় পার্টিই হবে নির্বাচনের ট্রাম্পকার্ড, এমন প্রত্যাশায় ফুরফুরে রয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।

কেন্দ্রীয় ছাত্রসমাজের প্রচার সম্পাদক আব্দুর রহিম বিশ্বাস বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ উপজেলায় জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ।

আব্দুর রহিম বিশ্বাস বলেন, বিএনপি যদি কোনো কারণে নির্বাচনে না আসে, তাহলে চাটখিল আসন থেকে লাঙ্গল প্রতীকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন তিনি।