বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কথাশিল্পী ও ঔপন্যাসিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তার বিখ্যাত চরিত্র ‘দেবদাস’, ‘পাবর্তী’, ‘রাজলক্ষ্মী’, ‘ইন্দ্রনাথ’, ‘গহব্বর’, ‘অচলা’ ও ‘বড়দিদি’ ইতোমধ্যে চলচ্চিত্রের পর্দায় বিভিন্ন সময়ে স্থান পেয়েছে। এসবের মধ্যে ‘দেবদাস’ নিয়ে এ পর্যন্ত বেশ কিছু চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে। এবার এই ঔপন্যাসিকের জনপ্রিয় চরিত্রগুলো নিয়ে নতুন একটি চলচ্চিত্র তৈরি করছেন আরিফুর জামান। এর নাম ‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’। এ ছবিতে পাবর্তীর চরিত্রে অভিনয় করছেন সাদিকা পারভিন পপি। এরই মধ্যে গতমাসে এ ছবির বেশ কিছু দৃশ্যের চিত্রায়ণ হয়েছে। পপি বলেন, গতমাসের শেষদিকে বিএফডিসির তিন নম্বর ফ্লোরে টানা কয়েকদিন ‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’ ছবির শুটিং হয়েছে। এর চিত্রনাট্য করেছেন পরিচালক নিজেই। আমাকে পার্বতীর চরিত্রে দর্শক এ ছবিতে দেখতে পাবেন। এর আগে এ বিষয় বা চরিত্র নিয়ে অনেকে কাজ করলেও এ ছবিটিতে কিছু ভিন্নতা থাকছে। কি সেই ভিন্নতা জানতে চাইলে পপি জবাবে বলেন, এর আগের ছবিগুলোতে শরৎচন্দ্রের পার্বতীকে দর্শক এমনভাবে দেখেনি। এ ছবিতে দেবদাসের সঙ্গে পাবর্তীর দেখা হওয়ার পরেও বিচ্ছেদ দেখা যাবে! কেনো এই বিচ্ছেদ-এ প্রশ্নটাই হচ্ছে ছবির মূল আকর্ষণ। আর ছবির প্রতিটি চরিত্রকেই বেশ যতœ সহকারে তুলে ধরছেন পরিচালক। আশা করি, দর্শকরা ছবিটি পছন্দ করবেন। এ ছবিতে ফেরদৌসের বিপরীতে অভিনয় করছেন পপি। সবশেষ ‘সোনাবন্ধু’ ছবিতে দর্শক এ অভিনেত্রীকে দেখেছেন। সেটাও গত ঈদের কথা। সামনেই রোজার ঈদ। তাই তার কাছে জানতে চাওয়া, একটা সময় প্রতি ঈদে পপি অভিনীত ছবি মুক্তি পেত। এই সময়ে সেটা দর্শক কম পাচ্ছে। এমনকি এবারের ঈদেও ছবি থাকছে না। কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখন তো ছবির কাজই কম হচ্ছে। আমার যখন প্রতি ঈদে ছবি মুক্তি পেত তখন এক বছরে দুইশ’র বেশি ছবির কাজ হত। এখন তো বছরে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশটি ছবি মুক্তি পাচ্ছে। অনেক ছবির মহরত হচ্ছে কিন্তু কাজ শেষ হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী পপি। কেন এই সময়ে এসে ছবির শুধুই মহরত দেখা যাচ্ছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আগে অনেক পেশাদার প্রযোজক আমরা পেয়েছি। তাদের এই শিল্পের প্রতি ভালোবাসা ছিল। টান ছিল। এখন যে সেই ধরনের প্রযোজক আসছে না তা বলব না। তবে সংখ্যাটা খুবই কম। ভালো ছবির প্রযোজক বাড়লে এমন দুর্দশা কেটে যাবে আমাদের। ইন্ডাস্ট্রির প্রতি ভালোবাসাটা সকলেরই বেশি থাকতে হবে। এদিকে বর্তমানে পপি আরো অভিনয় করছেন সাদেক সিদ্দিকী পরিচালিত ‘সাহসী যোদ্ধা’ চলচ্চিত্রে। এতে তার বিপরীতে আছেন আমিন খান। এ ছাড়া শহীদুল হক খানের দুটি চলচ্চিত্রেও তার কাজ শুরু করার কথা রয়েছে। আসছে ঈদে ছোট পর্দায় বিশেষ নাটক ও টেলিফিল্মে কাজ করার জন্যও কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে কথা চলছে পপির। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতি ঈদে অনেক কাজের প্রস্তাব আমার কাছে আসে। এবারও এসেছে। ব্যাটে-বলে মিলে গেলেই সামনের ঈদে ছোট পর্দায় আমার কাজ দর্শক দেখতে পারবেন। তবে এখনো কোনো নাটক বা টেলিছবির কাজ শুরু করিনি। উল্লেথ্য, ১৯৯৭ সালে ‘কুলি’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে রুপালী পর্দায় কাজ শুরু করেন পপি। এ পর্যন্ত অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ভালো অভিনয়ের সুবাদে ‘কারাগার’ (২০০৩), ‘মেঘের কোলে রোদ’ (২০০৮) ও ‘গঙ্গাযাত্রা’ (২০০৯)-এ তিন ছবিতে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পপি আশাবাদী তার মুক্তি প্রতীক্ষিত অন্যান্য ছবি নিয়েও। ভালো কিছু গল্পের ছবিতে চলতি বছর কাজ শুরু করতে চান এই অভিনেত্রী।