একটা কথা প্রায়ই শোনা যায়, আইসিসি নাকি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) অর্থনৈতিকভাবে কে বেশি শক্তিশালী? স্বাভাবিকভাবেই উত্তরে বিসিসিআইয়ের নামটা সবার আগে আসে। সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আইসিসির বার্ষিক আয় ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যেখানে বিসিসিআই আয় করেছেন ২ মিলিয়ন ডলার। আবার আইসিসির সিংহভাগ আয় এসেছে ভারত থেকে। আইসিসির শীর্ষ কর্তারা স্বীকার না করলেও বিশ্ব ক্রিকেটে যে বিসিসিআইয়ের প্রভাব স্পষ্ট সেটা বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান সেই কথাটি সরাসরি বলে দিলেন সংবাদমাধ্যমে।
আইপিএলের সময়টাতে শক্তিশালী দলগুলোর দ্বিপাক্ষিক সিরিজের সূচি থাকে না। থাকলেও সেখানে শীর্ষ ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ থাকে না। এ বিষয়টা নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে আলোচনা বহুদিন থেকে।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের দাপট মেনে নিয়ে সত্যি কথাটা বললেন ইমরান। লন্ডন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘মিডল ইস্ট আই’ যারা মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাবলি নিয়ে সংবাদ প্রচার করে। তাদেরকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ১৯৯২ বিশ্বকাপজয়ী ইমরান বলেন, ‘টাকাই এখন বড় অস্ত্র। শুধু খেলোয়াড় নয়, ক্রিকেট বোর্ডের জন্যও। আর সেই টাকা আছে ভারতে। তাই এখন ভারতই বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। আমি বলতে চাচ্ছি, তারা যা করে, যা বলে কেউই এর বিপরীতে কিছু বলার সাহস দেখায় না। কারণ এখানে অনেক টাকার বিষয় রয়েছে।’
১৮ বছর পর পাকিস্তানে পা রেখেছিল নিউজিল্যান্ড। আর ১৬ বছর পর পাকিস্তান সফরে আসার কথা ছিল ইংল্যান্ডের। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ম্যাচ না খেলেই পাকিস্তান ত্যাগ করে নিউজিল্যান্ড। ইংলিশরা নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন না তুললেও ক্রিকেটারদের ‘মানসিক’ ভাবে ভালো রাখার কারণ দেখিয়ে পাকিস্তান সফর বাতিল করে দেয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটি মাঠে গড়ানোর জন্য ইমরান খান নিজে কথা বলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। তাতে অবশ্য সফল হননি ইমরান। এ বিষয়ে এতদিন কথা বলেননি তিনি। ইমরান খান সফর বাতিলের কারণ হিসেবে অর্থকেই সামনে আনছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় ইংল্যান্ডের মতো দলগুলো মনে করে পাকিস্তানের সঙ্গে খেলে তাঁরা অনেক বড় উপকার করে ফেলছে। এমন ভাবনার পেছনে অন্যতম কারণ হলো এই টাকা।’
ক’দিন আগে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) চেয়ারম্যান রমিজ রাজা অনেকটা একই প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন। রমিজ বলেছিলেন, ‘আইসিসির আয়ের ৯০ শতাংশ আসে ভারত থেকে। আর আইসিসির দেয়া অর্থে চলে পিসিবি। ভারত থেকে আইসিসির আয় কমে গেলে বিপদে পড়বে পিসিবি। এজন্য আমাদের আর্থিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে।’