তুরস্কের একটি কয়লার খনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আগুন লাগার ঘটনায় অন্তত ২০১ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। খনির ভেতরে দুশ’-তিনশ’ জন শ্রমিক আটকা পড়েছেন। সময় যত গড়াচ্ছে নিহতের সংখ্যা ততই বাড়ছে।
তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলীয় মানিসা প্রদেশের সোমা শহরে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকালে কয়লাখনি ‘সোমা কোমুর’ এ বিস্ফোরণ ঘটে। খনিটি রাজধানী আঙ্কারা থেকে ৪৫০ কি.মি পশ্চিমে ভূ-পৃষ্ঠের ৪২০ মিটার গভীরে অবস্থিত।
তুরস্কের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী তানের ইলডিজ জানিয়েছেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন খনিটিতে বৈদ্যুতিক ত্রুটির পর আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণের কারণে কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়ায় ব্যাপক সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বিস্ফোরণের সময় কয়লার খনিটিতে ৭৮৭ জন কাজ করলেও তাদের কেউ কেউ বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।
তুরস্কের একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, উদ্ধারকর্মীরা আটকে পড়া জীবিত ব্যক্তিদের বের করে আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন এবং তারা প্রায় ৮০ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করতে পেরেছেন।
উদ্ধার হওয়া শ্রমিকরা জানিয়েছেন, খনির ভেতরে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে এবং প্রচ- ধুলায় দম বন্ধ হয়ে আসছে। উদ্ধারকর্মীরা বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে খনিটির ভেতরে অক্সিজেন পাঠাচ্ছেন।
হতাহত ও আটকে পড়া খনি শ্রমিকদের আত্মীয়-স্বজনদের পাশাপাশি হাজার হাজার উৎসুক মানুষ খনিটির মুখে ভিড় জমিয়েছেন।
খনিটের ভেতের কয়েক কিলোমিটার টানেল থাকায় বিস্ফোরণস্থলে আটকা পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছতে উদ্ধার কর্মীরা অসুবিধার শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মানিসার মেয়র চেঙ্গিস এরগুন।
তুর্কি খনি কোম্পানি সোমা কোমুর এক বিবৃতিতে খনিটির বিস্ফোরণকে একটি বেদনাদায়ক দুর্ঘটনা বলে অভিহিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দুঃখজনকভাবে এই দুর্ঘটনায় আমাদের কিছু কর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে।’
এদিকে দুর্ঘটনার কারণে প্রধানমন্ত্রী রাসিফ তায়েফ এরদোগান তার আলবেনিয়া সফর বাতিল করেছেন। তিনি দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
স্থানীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক বক্তব্যে এরদোগান বলেছেন, খনির ভেতরে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। আমি আশাবাদী আমরা তাদের উদ্ধার করতে পারবো।’
এর আগে ১৯৯২ সালে দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ খনি দুর্ঘটনায় ২৭০ জন নিহত হয়েছিল। বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন