দুর্ঘটনা ও যানজট সহনীয় মাত্রায় না আসা পর্যন্ত ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ মঙ্গলবার সংসদে বিরোধীদলীয় সাংসদ মাহজাবিন মোরশেদের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রশ্নোত্তরের আগে বিকেল চারটার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।
১০ নভেম্বর থেকে দেশজুড়ে ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।
অভিযানের প্রথম সপ্তাহে সাড়ে ছয় হাজার মামলা
এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, অভিযানের প্রথম সপ্তাহে সাড়ে ছয় হাজার মামলা হয়েছে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৪৭ লাখ ৬২ হাজার টাকা এবং কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ৩৬ জনকে। ১১৭টি যানবাহন ডাম্পিং করা হয়েছে। অভিযানের প্রথম সপ্তাহে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৩টি, মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের এবং আহত হয়েছে ৪৬ জন। এর আগে প্রতিদিনই গড়ে ১৩টি করে দুর্ঘটনা ঘটত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ অভিযান কোনোদিন বন্ধ হবে না, যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে আকস্মিক অভিযান চালানো হবে।
এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মালবাহী ট্রাকে অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনের কারণে সড়ক ও সেতুর স্বাভাবিক আয়ু কমে যায়। একই সঙ্গে ট্রাকের ট্রিপের সংখ্যাও কমে যায়। যে কারণে সরকারের রাজস্ব আদায় কম হয়। তবে বর্তমানে মহাসড়কে পাঁচটি এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন বসানো হয়েছে। এতে ট্রাকে অতিরিক্ত পণ্য বহনের মাত্রা কমে এসেছে। আরও ১০টি স্টেশন বসানো হবে।
অবৈধ যানবাহনের পরিসংখ্যান নেই
কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রশ্নের জবাবে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলেন, অবৈধ যানবাহনের পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয়ের কাছে নেই। তবে ঢাকা মহানগরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৮ লাখ ৫৩ হাজার ৩০৪টি। এর মধ্যে বাস ২১ হাজার ৬১৬টি, মিনিবাস ৯ হাজার ৯০৪টি, মোটরকার ২ লাখ ৩ হাজার ৩৩টি, মোটরসাইকেল ৩ লাখ ৩১ হাজার ৭৪৬টি এবং অন্যান্য যানবাহন ২ লাখ ৮৭ হাজার ৫টি।
দেশে দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান ২২৭টি
আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশের সড়কগুলোর মধ্যে ২২৭টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান আছে। এর মধ্যে ১৪৪টি স্থানে ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে মহাসড়কে দুর্ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে।
শরীফ আহমদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ ফোর লেন মহাসড়কের কাজ ২০১৫ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৫৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, কক্সবাজারের রামু থেকে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তের গুনদুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়েছে।
পাঁচ বছরে ১০৯৩টি রেল দুর্ঘটনা
এম আবদুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছরে দেশে মোট ১ হাজার ৯৩টি রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৫০ জন নিহত ও ৩৮৬ জন আহত হয়েছে। এসব রেল দুর্ঘটনায় মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৬ কোটি ৫৫ লাখ ৪৮ হাজার ৮৬৪ টাকা।