এনায়েত মজুমদার, চাঁদপুর প্রতিনিধি
রবিন আর হোসেন। আট বছর বয়সেই কাজে নেমে পড়েছেন। রবিনের বেতন ১ হাজার দুইশত টাকা আর হোসেনের বেতন ২ হাজার টাকা। তারা চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করেছে। এখন একটি বেকারীতে কাজ করছে।
আলিফা। রেললাইনের বস্তিতে বসতি। মা-বাবার সাথে কাটছে দিনণ। বয়স ১২ বছর। মা কষ্টকরে একবার মাদ্রাসায় ভর্তি করে ছিলো। দারিদ্রতা এসে হানা দিয়ে পড়া বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে এখন মায়ের সাথে কাজে নেমে পড়তে হয়েছে।
জসিম, আরিফ, তুহিন ও শরীফ। সবার বাড়ী নোয়াখালীর মাইজদী এলাকায়। তাদের বয়স যথাক্রমে ৮, ১০, ১৩, ১৪ বছর। তারা চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার রনি ইটভাটায় কাজ করছে। দারিদ্রতার কারণেই তাদের শিশু বয়সে ঝুঁকি নিয়ে শ্রম বিলিয়ে দিতে হচ্ছে।
গতকাল সকালে সরেজমিনে গিয়ে উপরোক্ত দৃষ্ট্রান্তগুলো চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে। জেলা শিশু একাডেমীর দেয়া তথ্য মতে চাঁদপুরে মোট জনসংখ্যার ২৫ ভাগ শিশু শ্রম রয়েছে।
গত ২০ নভেম্বর ছিলো বিশ্ব শিশু দিবস। ‘শিশু নির্যাতন বন্ধ করুন’Ñশ্লোগানকে সামনে রেখে জাতি সংঘের শিশু অধিকার সনদের ২৫ বছর ফুর্তি উদযাপন করছে দিবসটি। প্রতিবছর এই দিনটিতে বিশ্ব শিশু দিবস হিসেবে পালন করে আসছে জাতিসংঘ অর্ন্তভুক্ত দেশগুলো।
২৫ বছর পূর্বে ১৯৮৯ সনে জাতি সংঘে শিশু অধিকার সনদপত্রে ২২ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারও প্রথম স্বার করেছিলেন। অথচ এই বাংলাদেশে এখনও বন্ধ হয়নি শিশু শ্রম। যেখানে শিশু নির্যাতন বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের বাধ্যকতা অর্নিবায্য। সেখানে কাকা ডাকা ভোর থেকে শিশুদের পরিশ্রমী কাজে বেরিয়ে পড়তে হচ্ছে।
শিশু শ্রম নিরসনের উপায় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি আলী আশরাফ দুলাল বলেন, দারিদ্রতা মুক্ত হলেই শিশুশ্রম বন্ধ হওয়া সম্ভব।
জেলা শিশু একাডেমীর সহকারী পরিচালক কাউছার আহমেদ বলেন, জেলার মোট জনসংখ্যার ২৫ ভাগ শ্রমশিশু রয়েছে। জাতীয় শিশু নীতিমালা আইনে ১৬ বছর আর জাতি সংঘের ১৮ বছর শিশু শ্রম হিসেবে ধরা হয়। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জেলায় শ্রম শিশুদের নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে।