লেখক ও প্রকাশক হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করে ৩৮ জন বুদ্ধিজীবী যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। গতকাল সংবাদমাধ্যমে পাঠানো কামাল লোহানী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান সময়ে সংঘটিত প্রকাশক ও লেখকদের হত্যা দেশজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। মুক্তবুদ্ধির জাগরণকে রুদ্ধ করতে সামপ্রদায়িক জঙ্গিগোষ্ঠী একের পর এক এ ধরনের হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। গত এক বছরে পাঁচজন লেখককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলেও সরকার এখনও একটি হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে পারেনি। অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচার না করার ফলে হত্যাকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে। যে সব অপরাধীকে ধরা হয়েছে, তারাও জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
সরকারের এরূপ উদাসীনতা মুক্তবুদ্ধির মানুষদের হতাশ করেছে। সেই সঙ্গে জনগণের নিরাপত্তার অধিকার খর্ব করা হয়েছে। জনমনে হতাশা ও আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। বিবৃতিতে জানানো হয়, দেশকে অসামপ্রদায়িক প্রগতিশীল ধারায় এগিয়ে নিতে সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপরই বর্তায়। সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে খুনিদের আইনের আওতায় আনার বদলে লেখকদের সংযত হওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, খুনিদের চেয়েও বেশি অপরাধী হচ্ছে লেখালেখি করা। আমরা এ অবস্থাকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না। বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার ও তার গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতার দায়ভার জনগণ মেনে নিতে পারে না। তাই সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে প্রতিটি লেখক প্রকাশকের হত্যার সঙ্গে জড়িত দোষীদের দ্রুত খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় এনে জনমনে স্বস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন: আহমেদ রফিক, শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, কামাল লোহানী, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক যতীন সরকার, ড. অজয় রায়, হাসান আজিজুল হক, শুভ রহমান, নিখিল সেন, সৈয়দ হাসান ইমাম, অধ্যাপক ড. শফিউদ্দিন আহমেদ, শাহরিয়ার কবির, রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, মুশতারী শফি, ড. অনুপম সেন, অধ্যাপক মাহফুজা খানম, সেলিনা হোসেন, অধ্যাপক কাজী মদিনা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক এমএম আকাশ, অধ্যাপক আনু মুহম্মদ, আবুল মোমেন, মানবেন্দ্র বটব্যাল, অধ্যাপক আবুল বারাক আলভী, আবেদ খান, মশিউদ্দিন শাকের, লায়লা হাসান, অধ্যাপক বদিউর রহমান, অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান সেলিম, অধ্যাপক এএন রাশেদা, সুজেয় শ্যাম, কাজী মোহাম্মদ শীশ, মোনায়েম সরকার, কবি একে শেরাম, কবি গোলাম কিবরিয়া পিনু, সাইদুর রহমান বয়াতী।