ইউরোপের অন্যতম ফুটবল-জনপ্রিয় দেশ তুরস্ক। কিন্তু আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাদের উপস্থিতি কখনও উজ্জ্বল, কখন ও ম্লান। অনেক দিন তারা আন্তর্জাতিক ফুট বলে প্রায় অনুপস্থিত ছিল। কিন্তু ২০১৫ সালকে তুরস্ক ফুটবলের উত্থান বলা যায়। ফিফা র্যাঙ্কিং ও বড় টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের যোগ্যতা এ বছর তাদের বেশ। ইতিমধ্যে আগামী বছরের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা। ২০০৮ সালের পর ইউরোপ-সেরাদের এ আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো তারা। ৭ বছর পর এমন যোগ্যতা অর্জনের সঙ্গে ফিফা র্যাঙ্কিংয়েও তাদের বেশ উন্নতি। সর্বশেষ ঘোষিত ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে বড় লাফটি দিয়েছে তুরস্ক। ৩৭ থেকে এক লাফে তারা উঠে গেছে ১৮তম স্থানে। সর্বশেষ সাড়ে ৬ বছরের মধ্যে এটি তাদের সেরা র্যাঙ্কিং। ২০০৯ সালে তারা র্যাঙ্কিংয়ের ১২তম স্থানে উঠে চমক সৃষ্টি করেছিল। সেবার তাদের র্যাঙ্কিংয়ের এতো উপরে ওঠার পেছনে কার্যকর ভূমিকা পালন করে ২০০৮-ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। সর্বশেষ ওই টুর্নামেন্টে তারা শেষ চারে খেলে। কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে নাটকীয় ম্যাচে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কাটে তারা। কিন্তু ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে জার্মানির কাছে হেরে যায়। এর আগে ফিফা বিশ্বকাপেও তাদের উপস্থিতি ছিল দাপুটে। ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৪- সর্বশেষ তিন বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেনি তুরস্ক। কিন্তু ২০০২ বিশ্বকাপে তাদের নৈপুন্য ছিল চোখে পড়ার মতো। সেবার চমক জাগিয়ে সেমিফাইনালে খেলে। কিন্তু ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সেবারের বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিলের কাছে হেরে যায়। ওই বিশ্বকাপে এমন দারুণ নৈপুণ্য দেখানোর পর তারা কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে। ২০০৮ সালে ইউরোপিয়ান কাপে খেলার আগ পর্যন্ত ৬ বছর বড় কোনো টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। ২০০৮ এর পর আরও একটি লম্বা বিরতি যায় তুরস্কের। ৬ বছর পর ফের তারা এ আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে এবার। বাছাইপর্বে শক্তিশালী নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে ড্র ও জয়ের পর শেষ দুই ম্যাচে তারা চেক প্রজাতন্ত্র ও আইসল্যান্ডকে হারায়। এতে ‘এ’ গ্রুপে তৃতীয় স্থানে থেকেও তারা মূল পর্বের টিকিট কেটেছে। নিয়ম অনুযায়ী গ্রুপগুলোর শীর্ষ দুই দল ছাড়াও সেরা তৃতীয় দল সরাসরি চ্যাম্পিয়নশিপের টিকিট পায়। দলের এই অর্জনে তরুণ খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব দিলেন কোচ ফাতিহ তেরিম। বলেন, ‘আমাদের দলটা তরুণ। এই তরুণ খেলোয়াড়রাই মূলত তুরস্ককে ইউরোর মূল পর্বে উঠানোর নায়ক।’ আর নিজেদের আত্মবিশ্বাস ও পরিশ্রমেই এই পর্যায়ে উঠতে পেরেছে বলে মনে করেন দলের অধিনায়ক আরদা তুরান। সাবেক অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও বর্তমান বার্সেলোনার এ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বলেন, ‘আমরা নিজেরা নিজেদের ওপর বিশ্বাস রেখেছিলাম। ইউরোর মূল পর্বে ওঠার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই করেছি। আমরা কখনও হাল ছেড়ে দেইনি। আর এ ব্যাপারে সমর্থকরাও আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে।’