১৯৬০ আন্তর্জাতিক বক্সিং ক্যারিয়ার শুরু করেন ক্যাসিয়াস মার্কাস ক্লে। ১৯৬৪ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। নতুন নাম ধারন করেন মোহাম্মদ আলী। ওই বছরই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে যোগদানের চেষ্টা করেন। কিন্তু বানানে দুর্বলতার কারণে ভর্তি হতে পারেননি। কিন্তু ১৯৬৬ সালে ফের পরীক্ষা দেন। এবার তিনি এ ওয়ান ক্যাটাগরীতে উত্তীর্ণ হন। যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীতে প্রবেশ করেন তিনি। তখন ভিয়েতনামে যুদ্ধরত ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৬৭ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের জন্য ডাক পড়ে মোহাম্মদ আলীর। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মুখের ওপর ‘না’ করে দেন তিনি। মানবতার বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধে তিনি নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। তিনি তো ভিয়েতনাম যুদ্ধে গেলেন-ই না বরং সরকারের এই যুদ্ধ নীতির বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা শুরু করেন। নিজের খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায়ও তিনি দমে যাননি। মানবতার পাশে দাঁড়িয়ে বজ্রকণ্ঠে এর প্রতিবাদ করেন। এমন যুদ্ধ নিজের ধর্ম সমর্থন করে না বলে যুদ্ধে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন। এমন আচরণে সরকারের রোষানলে পড়েন আলী। এই ঘটনার রেশ ধরে মোহাম্মদ আলীর খেলার লাইসেন্স সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচার করা হয় মোহাম্মদ আলীর। মাত্র ২১ মিনিটের বিচারে তার আগের সব খেতাব কেড়ে নিয়ে সাময়িকভাবে খেলার লাইসেন্স বাতিল করা হয়। কিন্তু তারপরও মানবতার বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো কাজ করতে তিনি জারি হননি। বরং সরকারের ভিয়েতনাম আগ্রাসনের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘আমার ধর্মজ্ঞান বলছে- এ যুদ্ধ ঠিক নয়। কেন আমি আমার এক ভাইয়ের দিকে গুলি ছুড়বো? কিছু দরিদ্র, ক্ষুধার্ত ও অভাবী মানুষের বিরুদ্ধে সুপারপাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের মানে কী? তাদের (ভিয়েতনামবাসী) সাথে আমার কোনো বিবাদ নেই। তারা আমকে কালো বলে গালি দেয়নি। তারা আমার কোনো ক্ষতি করেনি। তাহলে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) কেন আমাকে উর্দি পরিয়ে ১০ হাজার মাইল দূরে পাঠিয়ে ভিয়েতনামবাসীর ওপর বুলেট আর বোমা মারতে বলবে? অথচ আমাদের লুইসভিলে (মোহাম্মদ আলীর গ্রাম) মানবাধিকার অস্বীকার করে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করা হয়। আমি এসব অন্যায় কাজের মধ্যে নেই। পৃথিবীর বুক থেকে এ অবিচার চিরতরে বন্ধ করা উচিৎ।’