সদস্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে আত্মঘাতি হয়ে উঠা পর্যন্ত তিন ধাপে চলে জঙ্গিদের তৎপরতা। পবিত্র ইসলাম ধর্মের মনগড়া ব্যাখ্যায় মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষকে যুক্ত করা হয় এই তৎপরতায়। আর নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, জিহাদের নামে মগজ ধোলাইকারিরা মাত্র ছয় সপ্তাহের মধ্যেই জঙ্গিদের করে তোলে আত্মঘাতি।
নির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও কমপক্ষে তিনস্তরে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় জঙ্গি তৈরিতে। এতে তাদের প্রশিক্ষক কিংবা নেতাদের পছন্দের তালিকায়ও সবচেয়ে বেশি টার্গেট কিশোর অথবা তরুনদের।
গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, বাংলাদেশে বিভিন্ন নামের জঙ্গি সংগঠন তৎপরতা চালালেও হামলার ধরন ও উদ্দেশ্য এক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায় প্রকাশিত হচ্ছে আন্তজার্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস কিংবা আল-কায়দার ব্যানারে।
বিভিন্ন অভিযানে আটককৃত জঙ্গিদের স্বীকারোক্তির প্রসঙ্গ টেনে গোয়েন্দারা জানায়, জঙ্গিদের সর্বোচ্চ সারিতে আছে তাত্বিক নেতারা। এরপরেই অবস্থান কথিত সামরিক কমান্ডারদের আর সবশেষ সারিতে আছে মাঠ পর্যায়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারিরা। যদিও এখন পর্যন্ত ধরাছোয়ার বাইরেই আছে মধ্য ও প্রথম সারির জঙ্গিরা। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, তিন ধাপের অতিক্রম করে আমাদের কিশোর যুবকরা হয়ে ওঠছে ভয়ঙকর সন্ত্রাসী।
বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসায় যাতায়াতকারী ধর্মপ্রাণ মানুষকে অনুসরন করে জঙ্গিরা শিকারের জাল ফেলে।, তৈরি করা হয় সখ্যতা। নাম ঠিকানা মোবাইল নম্বর আদানপ্রদানের মাধ্যমে সম্পর্কে একটু পোক্ত হলে ডাকা হয় গোপন বৈঠকে। পব্ত্রি কোরআন হাদিসের অপব্যাখায় সেখানেই চলে বিভিন্ন ধাপের মগজ ধোলাই।
একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গিরা যাদের টার্গেট করে তাদের সবাইকে দলে টানা হয় ভিন্ন ভিন্ন কায়দায়। ভিড়ে যাওয়াদের ওপর আসে হিজরতের নতুন নির্দেশনা। অর্থাৎ পরিবার, সমাজ থেকে বিছিন্ন হওয়া আর বদলেও দেয়া হয় নামও।
শেষের ধাপটি হয় লক্ষ্যবস্তুকে আক্রমন করার। এজন্য শারিরিক কসরত এবং ধাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র চালানো আর গুলি ছোড়ার কৌশলও শেখানো হয় জঙ্গিদের। লক্ষবস্তুকে ধর্মদ্রোহি অভিহিত করে তাকে হত্যার মাধ্যমে পরলৌকিক সুখ-সমৃদ্ধির প্রলোভন আর ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের প্রলোভনও দেখানো হয় ধর্মকে বিকৃত করে। এভাবে প্রায় দুই দশক ধরে কখনো প্রকাশ্য আবার কখনো গোপনে জঙ্গি তৎপরতা চললেও সাম্প্রতিক সময়ে তা ছাপিয়ে গেছে আগের ইতিহাস।