লক্ষ্মীপুরে বিএনপি কর্মী বাবর হোসেন হত্যা মামলায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সাইদুর রহমান গাজী এ রায় দেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও মামলার বাদী। আদালত ও আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, দণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন আলম, মিরাজ, মঞ্জু, মইন উদ্দিন, মোরশেদ আলম, মাসুদ, কালা মুন্সি, মামুন ওরফে সাইফুল ইসলাম মামুন, ভুট্টো ওরফে আবদুস সহিদ, মো. আবুল বাসার ও মহিনউদ্দিন। সবার বাড়ি সদর উপজেলার তিতারকান্দি, পূর্ব রাজাপুর ও গোবিন্দপুর এলাকায়। খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছেন জামাল, নুরুল হুদা লবা, নসু ওরফে আলী হোসেন ও নুরুল হক। আসামিদের মধ্যে মোরশেদ আলম ও মাসুদ আদালতে রায়ের সময় উপস্থিত ছিলেন। অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৮ই মার্চ রাত সাড়ে ১২টায় সময় বিএনপি কর্মী বাবর হোসেন তিতারকান্দি বাজারে ক্রিকেট খেলা দেখে বাড়ি ফিরার পথে ওই এলাকার মসজিদের কাছে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। ১০ই মার্চ নিহতের ভাই নুরুল আলম বাদী হয়ে সদর থানায় ১৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যামামলা করেন। একই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এরপর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মো. ইফসুফ আলী সেলিম, চরশাহী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী হায়দারসহ তিনজনকে ২০১১ সালের ২০শে জানুয়ারি এক আদেশে রাজনৈতিক বিবেচনায় অব্যাহতি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে অব্যাহতিপ্রাপ্ত ইফসুফ আলী সেলিম ইতিমধ্যে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে দীর্ঘ শুনানির পর আদালত মঙ্গলবার দুপুরে ওই রায় দেন। এ দিকে মামলার বাদী ও তার স্বজনরা রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন। রায় দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছেন তারা। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম ও আসামি পক্ষের আইনজীবী একেএম হুমায়ুন কবির জানান, বাবর হোসেন হত্যা মামলার রায়ে ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৪ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত। এছাড়া পেনাল কোডের ৩৪১ ধারায় অভিযুক্ত করে প্রত্যেককে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা অর্থদন্ডে দণ্ডিত করা হল। রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করছেন রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি আবুল কালাম।