সিঙ্গাপুরকে ৫-০ ও ইরানকে ৩-০ গোলে হারানোর পর বাংলাদেশের কিশোরীদের এবারের টার্গেট কিরগিজস্তান। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বে আগের দুই ম্যাচে ১৬ গোল হজম করা এই দলটির বিপক্ষে সন্ধ্যায় মাঠে নামবে বাংলাদেশ। আর এই ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতে গ্রুপ সেরা হওয়ার পথে আরো একধাপ এগুতে চায় গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। বাড়িয়ে নিতে চায় গোল সংখ্যাও। এদিকে একই ভেন্যু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সকাল ১১টায় সিঙ্গাপুরের প্রতিপক্ষ চাইনিজ তাইপে ও বিকাল তিনটায় ইরান খেলবে আরব আমিরাতের বিপক্ষে।
গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের মূল বাধা ভাবা হয়েছিল ইরান দলকে। সেই ইরানকে প্রথম ম্যাচে মাটিতে নামিয়ে এনেছে কৃষ্ণা বাহিনী। নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলেই সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধেও বড় জয় পেয়েছে এদেশের মেয়েরা। তৃতীয় ম্যাচে এসে কিরগিজস্তানের বিপক্ষে নতুন লক্ষ্য ঠিক করেছে বাংলাদেশ। আর সেটা হলো জয়ের সঙ্গে গোল ব্যবধানটা বাড়িয়ে নেয়া। বাফুফে আর্টিফিশিয়াল টার্ফে গতকালের অনুশীলনে শিষ্যদের সেই ধারনাই দিচ্ছিলেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। আগের দুই ম্যাচে আট গোল করলেও ডজন খানেক গোল মিস করেছে সানজিদা মার্জিয়ারা। কোচ চাইছেন কিরগিজস্তান ম্যাচে অন্তত এটা যাতে না হয়। এর ব্যাখ্যায় ছোটন বলেন, ইরানকে হারানোর পর গ্রুপ সেরা হওয়ার দৌড়ে আমাদের এখন মূল প্রতিদ্বন্দ্বী চাইনিজ তাইপে। দুই ম্যাচে দুই জয়ে তারা ১২ গোল করেছে। বাংলাদেশের গোল সেখানে মাত্র আটটি। এ কারণেই কিরগিজস্তানের বিপক্ষে গোল সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে চাই আমরা, যাতে চাইনিজ তাইপের সঙ্গে ড্র করলেও চূড়ান্ত পর্বে জায়গা পায় বাংলাদেশ।’ ছোটনের গোল মিস নিয়ে উদ্বিঘ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। আগের দুই ম্যাচে ছবির মতো ফুটবল খেলেছে তহুরা- মারিয়ারা। যেখানে যা চেয়েছে তাই হয়েছে। ডানদিন বামদিক সবদিক দিয়ে আক্রমণে উঠেছে। কোথাও কোনো ভুল ছিল না তাদের খেলায়। কিন্তু কাজের কাজই যেন হচ্ছিল না। পোস্টের সামনে গিয়েই বার বার নিজেদের হারিয়ে ফেলছিলেন সানজিদারা। দুই ম্যাচেই এমন হয়েছে প্রথমার্ধে। ইরান ম্যাচেতো গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৬২ মিনিট। সিঙ্গাপুর ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথম গোল পেয়েছে ৩৮ মিনিটে। প্রথম দুই ম্যাচের শিক্ষা নিয়ে আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ। গতকাল অনুশীলনের আগেই দলটির কোচ জানালেন। ‘আসলে আড়াই মাস দলটি এক সঙ্গে অনুশীলন করলেও সেই ভাবে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলতে পারেনি। যে কারণে ম্যাচে এসব ভুল হচ্ছে। চেষ্টা করছি কিরগিজস্তান ম্যাচে মেয়েরা যেন এই ভুল না করে।’ প্রতিপক্ষ নিয়ে মহিলা ফুটবলের সফল এই কোচ বলেন, কিরগিজস্তানের খেলা আমি দেখেছি। তারপরেও তাদেরকে আমি একটুও হালকা ভাবে নেবো না। কারণ এটা অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল। এই লেভেলে ফুটবলে যেকোনো দিন যেকোনো অঘটন ঘটে যেতে পারে। এজন্য আমি সতর্ক থাকবো।’ প্রায় প্রতিটি ম্যাচে অতিমাত্রায় তাড়াহুড়া করছে মেয়েরা। যে কারণে সহজ সুযোগ পাওয়ার পরও তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এজন্য বয়সকে দুষলেন ছোটন। ‘ওদের গতি বেড়ে গেছে। সে অনুপাতে বুদ্ধি বাড়েনি। বেশি বেশি ম্যাচ খেললে এই সমস্যা আর থাকবে না’- বলছিলেন এই কোচ। এদিকে বাংলাদেশকে শক্ত প্রতিপক্ষ মেনেই স্বাগতিকদের বিপক্ষে যত কম গোল খাওয়া যায় এ লক্ষ্যই নির্ধারণ করেছে কিরগিজস্তান। এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে চাইনিজ তাইপের সঙ্গে ৭-১ ও ইরানের কাছে ৯-০ গোলে হেরেছে কিরগিজস্তান।