লেখকঃ আবদুল মালেক। কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
সহ-সম্পাদনায়ঃ ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী।
অবশেষে যুদ্ধাপরাধীর সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রস্তাব দিল সংসদ, এ জন্য সাধুবাদ প্রাপ্য। তবে যেন কথার কথা না হয়। অতীতে অাশাবাদি হতে হতেও নিরাশ হয়েছি। কোথায় যেন সন্দেহের দোলাচল। মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের নাগরিক সুবিধা এক হতে পারেনা। জনাব অাইনমন্ত্রী, বংশপরম্পরায় যেন কুলাঙ্গারের সন্তানেরা এই সম্পদ না পায়। দ্রুত অাইন করুন, বিলম্বে বহু শুভকাজ পন্ড হতে দেখেছি।
যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রশ্নে অামার ভিন্ন মত অাছে। এই বিচার কার্যে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র একাট্টা ছিল, অামি তা মনে করিনা। শেখ হাসিনার সাহস, দৃঢ়তা ও জাতিকে দেয়া commitment-এর ফলেই ঐতিহাসিক বিচারকার্যটি অালোর মুখ দেখেছে। সংশ্লিষ্ট অনেকে regime change -এর সম্ভাব্য পরিনতি বিবেচনায় শংকিত থেকে ‘ধরি মাছ, না ছুঁই পানি’ স্টাইল বজায় রেখেছেন অদ্যাবধি। কাজেই কুলাঙ্গারদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত বিষয়ে শেখ হাসিনার ঐকান্তিক ইচ্ছাকে যেন অহেতুক বিলম্বিত করা না হয়।
অামাদের ভুলে গেলে চলবে না, যুদ্ধাপরাধীরা দুটি উপায়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। একাত্তরে ভারতে অাশ্রয় নেয়া মানুষের সম্পদ লুট এবং পচাত্তর পরবর্তীকালে মোশতাক-জিয়ার হাত ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও সম্পদ তৈরী। এই কুলাঙ্গারদের সম্পদে মিলেমিশে অাছে অামাদের চাপা কান্না ও বুকের তাজা রক্ত। তাদের সম্পদ যতদ্রুত সরকারের খাজাঞ্চিতে অাসবে ততই মঙ্গল।
দীর্ঘসময় পরে হলেও অামাদের মহান জাতীয় সংসদের অাইন প্রণেতারা একটি শুভ উদ্যোগ নিয়েছেন বলে সাধুবাদ জানাই। সংসদে সর্বসম্মত ভাবে যুদ্ধাপরাধীর সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। অার অাইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী জানিয়েছেন, দ্রুততম সময়ে অাইন প্রনয়ন করে তা সংসদে উপস্থাপন করা হবে। মাননীয় অাইনমন্ত্রীর কাছে নিবেদন, যেন অাইনে কোনো ফাঁকফোকর না থাকে।
বাংলায় মীরজাফরের অভাব নাই। যুগে যুগে বিশ্বাসঘাতকেরা এ মাটিকে করেছে কলুষিত, কলঙ্কিত। ভবিষ্যতে যেন মীরজাফররা ফাঁক গলে ঢুকে না পড়ে সে জন্য সচেতন থাকতে হবে। মাননীয় সাংসদদেরও এই অাইনটি সজাগ ও সতর্কভাবে করতে হবে। regime change হলেও যেন রাজাকারের সন্তান-সন্তত্তিরা ঐ সম্পদ দাবি করতে না পারে। এরা মাথা নিচু করে, দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক হয়ে এ দেশে থাকলেও থাকতে পারে।।
জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।