অদ্য ১৮ জানুয়ারি সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নির্মাণ শ্রমিকদের দাবি দিবস উপলক্ষে ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব) এর উদ্যোগে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ইনসাবের সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শহিদুল্লাহ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ডা: ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বিলস এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মেদ, ইনসাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলী হোসেন, সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন অর রশীদ, সহ সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খোকন, দপ্তর সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান আজিজ, অর্থ সম্পাদক মোঃ রেজাউল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্মাণ শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ঝুকিপূর্ণ কাজ করে প্রতিনিয়তই কর্মস্থলে নিহত ও আহত হচ্ছে। নির্মাণ শ্রমিকদের কর্মস্তলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এলাকা ভিত্তিক সেইফটি কমিটি গঠন এবং পরিদর্শন করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদারকি প্রয়োজন। নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আনার জন্য অবিলম্বে পেনশন স্কীম, বাসস্থান, রেশনিং ব্যবস্থাসহ নি¤েœাক্ত ১২ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
দাবিসমূহ: (ক) সরকারী উদ্যোগে রাজধানী ঢাকা শহরে থানা ও ওয়ার্ড ভিত্তিক এবং সারাদেশে জেলা নির্মাণ কলোনী স্থাপন করে সুলভ মূল্যে দীর্ঘমেয়াদী লীজ প্রধানের মাধ্যমে নির্মাণ শ্রমিকদের বাসস্থান নিশ্চিত করতে হবে। (খ) নির্মাণ ক্ষেত্রে উপযুক্ত কর্মপরিবেশ এবং নির্মাণ শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। (গ) শ্রম আইনের আওতায় নির্মাণ শ্রমিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পেনশন বীমা স্কীম চালু, দূর্ঘটনায় নিহত শ্রমিক- এর ১০ লক্ষ টাকা এবং আহত শ্রমিক- এর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। (ঘ) নির্মাণ শ্রমিকরা তাদের অধিকার বাস্তবায়নে যাতে সহজে আদালতের ¯œরণাপন্ন হতে পারে সে লক্ষ্যে প্রত্যেক জেলা/ইজেলায় শ্রম আদালত স্থাপন করতে হবে এবং পাওনাদী অধিকার ৪২ দিনের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করতে হবে। (ঙ) শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেরশনের তহবিল থেকে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য কল্যাণমুখী কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে। (চ) শ্রম আইন সংশোধনী ২০০৬ এর ৩২৩ ধারা মোতাবেক জাতীয় শিল্প স্বাস্থ্য কাউন্সিল গঠনে ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাধেশ (ইনসাব) এর প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। (ছ) নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য সস্তা ও সুলভমূল্যো পূর্ণ রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। (জ) কর্মস্থলে নির্মাণ শ্রমিকরা যাতে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার শিকার না হয় তা নিষ্চিত করতে হবে। (ঝ) সরকারীভাবে প্রশিক্ষণ প্রধান করে শুধু সার্ভিস র্চাজ নিয়ে নির্মাণ শ্রমিকদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ দিয়ে বিদেশে উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে এবং বর্তমানে বিদেশে কর্মরত নির্মাণ শ্রমিকদের হয়রানি ও দূর্ভোগ বন্ধ করতে হবে। (ঞ) সরকারী উদ্যোগে বিভাগীয় শহরে থানা ভিত্তিক এবং জেলা ও উপজেলায় শ্রম ছাউনি নির্মাণ করতে হবে। (ট) নারী নির্মাণ শ্রমিকদের সমকাজে সমমজুরী নিশ্চিত করতে হবে। উপরোক্ত দাবিসমূহ বাস্তবায়নে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা জানানো হয়।
সমাবেশ শেষে নির্মাণ শ্রমিকদের এক বিশাল র্যালী প্রেসক্লাব থেকে পল্টন মোড়, জিপিও, জিরো পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।