‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ নিয়ে তীব্র বিরোধের পর মুখ খুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ৭টি মুসলিম দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন এ সপ্তাহে। এর প্রতিবাদ হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মুখ খুলেছেন বিশ্বনেতারা। হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। এর জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি অভিবাসন নীতিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। এটা ‘মুসলিম ব্যান’ বা মুসলমানদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা নয়। রোববার তিনি এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে বলেছেন, আমেরিকা অভিবাসীদের নিয়ে একটি গর্বিত দেশ। যারা নিষ্পেষণ থেকে পালাচ্ছেন তাদের প্রতি আমাদের সমবেদনা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু আমাদের নাগরিক ও সীমান্ত রক্ষার জন্য আমাদেরকে এটা (৭ মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ) করতেই হচ্ছে। আমেরিকা হলো মুক্তমনা ও সাহসীদের দেশ। আমরা এ দেশকে মুক্ত ও নিরাপদ রাখবো। এ কথা মিডিয়া জানে। কিন্তু তারা তা বলতে দ্বিধা করে। ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যা করেছিলেন আমার নীতিও সেই একই রকম। তখন প্রেসিডেন্ট ওবামা ইরাকি শরণার্থীদের ভিসা দেয়া নিষিদ্ধ করেছিলেন ৬ মাস। প্রেসিডেন্ট ওবামা প্রশাসন এর আগে যে দেশগুলোকে সন্ত্রাসের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন সেই ৭টি দেশের বিরুদ্ধেই নির্বাহী আদেশ দেয়া হয়েছে। ট্রাম্প বিবৃতিতে পরিষ্কার করে বলেন, এটা পরিষ্কার যে, এই নিষেধাজ্ঞা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়। মিডিয়া এটা নিয়ে ভুল তথ্য প্রকাশ করছে। এই নিষেধাজ্ঞা কোনো ধর্মের বিষয়ে নয়। এটা সন্ত্রাস বিষয়ক এবং আমাদের দেশকে নিরাপদ রাখার উপায়। বিশ্বে ৪০টিরও বেশি দেশ আছে, যেসব দেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। নির্বাহী আদেশের আওতায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। ট্রাম্প বলেন, আমরা পর্যালোচনা শেষ করে এবং ৯০ দিনের মধ্যে সর্বোত্তম নিরাপত্তা বিষয়ক নীতি প্রয়োগ করে সব দেশের জন্য আমরা আবার ভিসা দেয়া শুরু করবো। সিরিয়ায় ভয়াবহ মানবিক সঙ্কটে যেসব মানুষ দুঃসহ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তাদের প্রতি আমার ভীষণ সহানুভুতি আছে। কিন্তু আমার প্রথম অগ্রাধিকার হলো আমাদের দেশকে নিরাপত্তা দেয়া ও দেশের সেবা করা। যারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাদের সহায়তার জন্য পথ বের করার চেষ্টা করবো আমি। ওদিকে শনিবার বিভিন্ন বিমানবন্দরে বিক্ষোভের পর রোববারও নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন, বোস্টনে ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। এদিন সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয় লোয়ার ম্যানহাটানের ব্যাটারি পার্কে। নিউ ইয়র্কে ডেমোক্রেটিক সিনেটর চার্লস শুমার বলেছেন, ট্রাম্পের নির্দেশ আমেরিকার মূল্যাবোধের বিরোধী। এখানে আমরা যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি তাতে অনেক মানুষের জীবন ও মৃত্যু জড়িয়ে আছে। এই ভয়াবহ আদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমি শান্ত হবো না।