ট্রেন্ট বোল্টের ৬ উইকেটের পরে রস টেইলরের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে তৃতীয় ওয়ানডেতে ২৪ রানে পরাজিত করে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। এর ফলে চ্যাপেল-হ্যাডলি সিরিজ পুনরায় নিজেদের ঘরে এনেছে নিউজিল্যান্ড। একইসাথে অস্ট্রেলিয়া বিশ্ব ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটিও হারানোর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। এই পরাজয়ে তাদের র্যাঙ্কিং পয়েন্ট ১১৮তে নেমে এসেছে। যা দক্ষিণ আফ্রিকার সমান। জোহানেসবার্গে শনিবার শ্রীলংকাকে ৭ উইকেটে পরাজিত করে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচে যদি দক্ষিণ আফ্রিকা জয়লাভ করতে পারে তবে অস্ট্রেলিয়ার থেকে এগিয়ে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটি তারাই দখল করবে।
টসে জেতার সাথে সাথে হ্যামিল্টনের উইকেটে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্তে কোন ধরনের দ্বিধা করেননি কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। উইকেট বিবেচনায় আগে থেকেই উইলিয়ামসনের বোলারদের ওপর যে আস্থা ছিল তার প্রমান বোল্ট একাই দিয়েছেন। কিন্তু ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে আগে ব্যাটিংয়ের সুবিধাটা অবশ্য খুব একটা ভালভাবে নিতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। টেইলরের ১০১ বলে ১০৭ রানের ইনিংস সত্তেও নিউজিল্যান্ডের ইনিংস ৯ উইকেটে ২৮১ রানে শেষ হয়। ডিন ব্রাউনলির সাথে তৃতীয় উইকেটে ১০০ রান যোগ করেছেন। ব্রাউনলির ব্যাট থেকে এসেছে ৬৩। প্রথম ওয়ানডেতে ৬ রানে জয়ের পরে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তখনই অস্ট্রেলিয়ার সামনে সিরিজ বাঁচানোর পাশাপাশি র্যাঙ্কিংয়ের বিষয়টিও শঙ্কার মধ্যে পড়ে। তবে ২৮২ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে এ্যারন ফিঞ্চ ও শন মার্শ অস্ট্রেলিয়াকে দূরন্ত সূচনা এনে দেন। বিশেষ করে টিম সাউদির ওভারগুলোতে তারা দুজনেই রানে গতি সচল রাখে। প্রথস স্পেলে চার ওভারে সাউদি ৩০ রান দিয়েছেন। কিন্তু নতুন বলে তার পার্টনার বোল্ট প্রথম চার ওভারে ১০ রানে এক উইকেট দখল করেন। ২২ রানে রান মার্শ রান আউট হবার পরে পিটার হ্যান্ডসকম্ব বোল্টের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন। তৃতীয় উইকেটে ফিঞ্চ ও ট্রেভিস হেড মিলে ৭৫ রানে জুটি গড়ে তুলেন। কিন্তু ৫৬ রানে ফিঞ্চ বোল্টের বলে ডিপ মিড উইকেটে উইলিয়ামসনের হাতে ধরা পড়ার পরের ওভারেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল কোন রান না করেই মিচেল সান্টনারের বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ তুলে দিলে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১২০। হেড ও মার্কুস স্টোয়িনিস মিলে ৫৩ রানের পার্টনারশীপ গড়ে তুললেও বোল্ট দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে মাত্র চার বলের ব্যবধানে হেড (৫৩) ও জেমস ফকনারের (০) উইকেট তুলে নেন। ৪২ রানে স্টোয়িনিসের উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর দাঁড়ায় সাত উইকেটে ১৯৮। শেষ ১০ ওভারে জয়ের জন্য ওভার প্রতি ৮.৩০ রান রেটের প্রয়োজন ছিল। মিচেল স্টার্ক (২৯*) ও প্যাট কামিন্স (২৭) মিলে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের স্বপ্ন দেখালেও শেষ দুই ওভারে তিন উইকেট তুলে নিয়ে বোল্ট নিউজিল্যান্ডকে দারুন এক জয় উপহার দিয়েছেন। ৩৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন বোল্ট। নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে অবশ্য নায়ক ছিলেন টেইলর একাই। ন্যাথ্যান এ্যাস্টেলের সাথে নিউজিল্যান্ডের হয়ে রেকর্ড ১৬টি ওয়ানডে সেঞ্চুরির মালিক এখন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ২ উইকেটে নিউজিল্যান্ডের স্কোর যখন ৭৬ তখনই তিনি ক্রিজে আসেন। দুই বছর পরে প্রথমবারের মত দলে ফিরে ব্রাউনলিও নিজেকে প্রমান করেছেন। এর আগে কিউইদের হয়ে তার সর্বোচ্চ রান ছিল ৪৭।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেটে ২৮১ (টেইলর ১০৭, ব্রাউনলি ৬৩; স্টার্ক ৩-৬৩, ফকনার ৩-৫৯)
অস্ট্রেলিয়া অল আউট ২৫৭, ৪৭ ওভার (ফিঞ্চ ৫৬, হেড ৫৩, স্টোয়িনিস ৪২; বোল্ট ৬-৩৩, সান্টনার ২-৫০)
ফল : নিউজিল্যান্ড ২৪ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে নিউজিল্যান্ড ২-০ ব্যবধানে জয়ী