জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি নিয়েছেন তিনি। ২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল। দীর্ঘ ১০ বছর চাকরিও করছেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে। উচ্চমান
সহকারী হিসাবে চাকরিতে যোগ দিয়ে নেমে পড়েন সিবিএ রাজনীতিতে। ২০১৫ সালে নির্বাচিত হয়েছেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী ইউনিয়ন সভাপতি। আর সভাপতি হওয়ার পর বোর্ডের নানা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে তাকে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। গত ৮ই জুন চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত সাময়িক বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী চাকরি প্রবিধানমালা এসআরও নং-৩৩১-আইন/৯১ এর ৩৬ ধারার আওতায় সার্টিফিকেট জালিয়াতি সংক্রান্ত গুরুতর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা প্রাপ্তির ভিত্তিতে উল্লিখিত প্রবিধানের ৪১ ধারা মোতাবেক বোর্ডের উচ্চমান সহকারী মো. রজব আলীকে চাকরি থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হলো। এর আগে গত ৩১শে মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুবোধ চন্দ্র ঢালি স্বাক্ষরিত এক পত্রে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠি প্রাপ্তির এক সপ্তাহ পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়- বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের উচ্চমান সহকারী মো. রজব আলী দুই বার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। উভয় পরীক্ষার সনদপত্রে তিনি একাধিক জন্ম তারিখ ব্যবহার করেছেন যা আইনসম্মত নয়। এমতাবস্থায় রজব আলীর আইনবহির্ভূত একাধিক এসএসসি সনদ ও জন্ম তারিখ থাকার বিষয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আইনের আওতায় তার বিরুদ্ধে যথা নিয়মে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক অত্র বিভাগকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এ প্রতিবেদকের হাতে রজব আলীর দুটি সার্টিফিকেটই এসেছে। যার একটিতে দেখা যায় তিনি রাজশাহী বোর্ডের সিংড়া কলম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। যেখানে তার রোল নং সিংড়া-১৯৩ ও রেজি নং দেখা গেছে ১৫০৯১/৮৭। ওই সার্টিফিকেটে তার জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩। অন্যদিকে অপর সার্টিফিকেটে দেখা গেছে তিনি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর আমগাছিয়া সাহারবানু উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। ১৯৯৫ সালে দেয়া এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেটে তার রোল নং-৫১৯৫০১। জন্ম তারিখ ৭ই জুলাই ১৯৮০। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি হিসাবে বোর্ডের সকল অনিয়ম দুর্নীতির হোতা এই রজব আলী। তার মাধ্যমেই রেজিস্ট্রেশন রিপ্লেস জালিয়াতি থেকে শুরু করে সকল অনিয়ম হয়েছে। তার দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত কমিটি মাঠে কাজ করছে।