আসরে অজেয় চেহারা নিয়ে সেমিফাইনালে খেলছে দু’দলই। দুই গ্রুপে অপরাজিত দু’দলের সংগ্রহও সমান ৭ পয়েন্ট। ফিফা কনফেডারেশন্স কাপ আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি ও উত্তর-মধ্য আমেরিকার ফুটবলের রাজা মেক্সিকো। রাশিয়ার কাজানে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায়। গ্রুপের লড়াইয়ে ক্যামেরুন ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় ও চিলির সঙ্গে ড্র শেষে সেমিফাইনালের টিকিট পায় ২০১৪ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। অপর গ্রুপে আলোকিত নৈপুণ্য দেখায় মেক্সিকো। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ২০১৬’র ইউরো চ্যাম্পিয়ন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালকে ২-২ গোলে ড্রতে রুখে দেয় মেক্সিকানরা। আর ওশেনিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় নিয়ে তারা গ্রুপের শেষ ম্যাচে চমক দেখায় স্বাগতিক রাশিয়াকে হারিয়ে। ওই ম্যাচ ড্র নিয়ে শেষ করতে পারলেই চলতো মেক্সিকোর। তবে রুশদের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় নিয়েই সেমিফাইনালে পা রাখে মেক্সিকানরা। এবারের কনফেডারেশন্স কাপের সবচেয়ে কমবয়সী দলের রেকর্ডটি জার্মানির। আসরে জার্মানি দলের খেলোয়াড়দের গড় বয়স ২৪ বছর চার মাস। খেলছেন না টমাস মুলার, ম্যানুয়েল নয়্যারের মতো শীর্ষ তারকারা। তবে আসরে পা রেখেই জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী কোচ ইয়াকিম লো’ বলেন, টুর্নামেন্টটি নিজের করে নিতে চাইছে আমার দলের খেলোয়াড়রা। আর আসরে বল পায়ে ক্রমেই উন্নতি দেখাচ্ছে জার্মানি। প্রত্যাবর্তন কাকে বলে, চলতি আসরে তা দেখিয়েছে মেক্সিকানরা। গ্রুপে নিজেদের তিন ম্যাচেই আগে গোল হজম করতে দেখা যায় মেক্সিকোকে। এমন দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড রাশিয়ার বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। আর শেষ মুহূর্তে গোল নিয়ে ড্রতে চুপসে দেয় পর্তুগিজদের। ওই ম্যাচে মেক্সিকো পিছিয়ে পড়ে দুই দুইবার। জার্মানদের সাম্প্রতিক ফর্মটাও আকাশেই। টানা ১৩ ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে তারা। এর ১০ ম্যাচে জয়ের রেকর্ড জার্মানদের। ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের পর আর হারের স্মৃতি নেই তাদের। গত বছর জুনে ইউরোর সেমিফাইনালে স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে ২-০ গোলে হার দেখে তারা। সর্বশেষ জার্মান বুন্দেসলিগায় ২১ গোলের কৃতিত্ব দেখান আরবি লিপজিগ স্ট্রাইকার টিমো ওয়ার্নার। গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ক্যামেরুনের বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানের জয়ে জোড়া গোল করেন তরুণ জার্মান ফরোয়ার্ড। বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সেল নামে খ্যাত কনফেডারেশন্স কাপে ফাইনালে খেলার নজির নেই চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির। অবশ্য মহাদেশীয় সেরা দলগুলোর অংশগ্রহণে আয়োজিত ফিফার এ আসরে একবার শিরোপার স্বাদ নিয়েছে মেক্সিকো। ১৯৯৯ কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনালে মেক্সিকো ৪-৩ গোলে জয় কুড়ায় ওই সময়ের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের বিপক্ষে। জার্মানির জন্য আজ বিপজ্জনক হতে পারেন মেক্সিকোর জার্সি গায়ে ৯৪ ও ৯৩ ম্যাচের তারকা দুই ফরোয়ার্ড হাভিয়ের হার্নানদেজ ও জিওভানি দস সান্তোস।
জার্মানি কোচের স্মৃতিতে তাজা ২৯শে জুন
২৯শে জুন ২০০৫। ফিফা কনফেডারেশন্স কাপের স্থান নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই সেমিফাইনালের বিজীত দল জার্মানি ও মেক্সিকো। ওই ম্যাচে জার্মানির ডাগআউটে হাজির ছিলেন জাতীয় দলের তখনকার সহকারী কোচ ইয়াকিম লো’। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে ওই ম্যাচে ৪-৩ গোলে জয় কুড়ায় জার্মানি। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ গোলে ড্র শেষে অতিরিক্ত সময়ে দুইবার লক্ষ্যভেদ করেন জার্মান তারকা লুকাস পোডলস্কি ও বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগার। কনফেডারেশন্স কাপ আসরে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির সেরা সাফল্য বলতে সেইবারের তৃতীয় স্থানটিই।
জার্মানি: মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগান (গোলরক্ষক), ম্যাথিয়াস জিনটার, শোকদরান মুস্তাফি, আন্তোনিও রুডিগার, জশুয়া কিমিক, লিওন গোরেসকা, এমরে চান, ইয়োনাস হেক্টর, লার্স স্টিনডল, জুলিয়ান ড্রাক্সলার ও টিমো ওয়ার্নার।
মেক্সিকো: গিলার্মো ওচোয়া (গোলরক্ষক), মিগুয়েল লাইয়ুন, নেস্তর আরাউহো, হেক্টর মোরেনো, ওসওয়ালদো আলানিস, জনাথন দস সান্তোস, হেক্টর হেরেরা, লুইস রেইস, রাউল হিমেনেজ, হাভিয়ের হার্নানদেজ ও হাভিয়ের আকিনো।