বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের আগের কমিটির অজ্ঞতার কারণে বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করেছিল আন্তর্জাতিক অ্যামেচার অ্যাথলেটিক ফেডারেশন (আইএএএফ)। এমনকি বাৎসরিক অনুদান দেয়াও বন্ধ করে দিয়েছিল অ্যাথলেটিক্সের এই বিশ্ব সংস্থাটি। নতুন কমিটি দায়িত্ব নেয়ার পর সে দুরাবস্থা কাটিয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সংগঠনটির সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি, আয়-ব্যয়ের হিসাবের অডিট রিপোর্ট প্রদান এবং আন্তর্জাতিক আসরগুলোয় অংশ নেয়ার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশের অ্যাথলেটিক্স। সম্প্রতি আইএএএফ চিঠির মাধ্যমে বাংলাদেশকে এ সুখবর জানিয়েছে।
আগের কমিটির শেষ ১৪ মাস বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশন কোনো যোগাযোগই রাখেনি আইএএএফ-এর সঙ্গে। এমনকি বিশ্ব অ্যাথলেটিকের অভিভাবক সংস্থাটি মেইলের পর মেইল দিয়েও কোনো জবাব পায়নি। তাই সদস্য সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশের পাশে তারা কালো দাগে লিখে রেখেছিল ‘নট ইন গুড স্ট্যান্ডিং’।
মার্চে আগের কমিটি বিলুপ্ত করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করে দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তারপরই প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে দেশের অ্যাথলেটিক্সে। যার সুবাদে বিশ্ব অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং আগস্টে বিশ্ব অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেয়ার সুযোগ পায় বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা। নাইরোবিতে যুব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন বিকেএসপির ছাত্র জহির রায়হান। আর লন্ডনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলবেন দেশের দ্রুততম মানব মেজবাহ আহমেদ।
এই দু’টি আসরে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিশ্ব সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের দূরত্ব ঘুচে যাওয়ার আশা করছেন বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল রকিব মন্টু।
এদিকে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেয়ার আগে স্প্রিন্টার মেজবাহ আছেন ভুবনেশ্বরে। সেখানে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এশিয়ান অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য। বাংলাদেশ অ্যামেচার অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের উদ্যোগ এবং ইন্ডিয়া অ্যামেচার অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা এ সুযোগ পেয়েছেন প্রতিযোগিতার আগে। ৬ থেকে ৯ই জুলাই ভুবনেশ্বরেই অনুষ্ঠিত হবে এই চ্যাম্পিয়নশিপ।
ঘরের ট্র্যাকে রাজত্ব করা মেজবাহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বড় আসর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও করতে যাচ্ছেন ‘অংশগ্রহণের হ্যাটট্রিক।’ মস্কো, বেইজিংয়ের পর এবার তিনি অংশ নেবেন আগামী ৪ থেকে ১৩ই আগস্ট লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য আইএএএফ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের ১৬তম আসরে। মেজবাহ আহমেদ ২০১৩ সালে রাশিয়ার মস্কোয় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দৌড়েছিলেন ১১.২৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে। ২০১৫ সালে চীনের বেইজিংয়ে সময় নিয়েছিলেন ১১.১৩ সেকেন্ড। সর্বশেষ রিও অলিম্পিকে মেজবাহ সময় নিয়েছিলেন ১১.৩৪ সেকেন্ড। এসএ গেমসে মেজবাহর সময় ছিল ১০.৭২ সেকেন্ড। দ্রুততম মানবের খেতাব ধরে রাখতে সর্বশেষ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে মেজবাহর টাইমিং ছিল ১০.৬৩ সেকেন্ড।