বাধ্য হলে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সামরিক শক্তি ব্যবহার করা হবে। এমন সতর্কতা ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত নিকি হ্যালে এই হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন। এছাড়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রামেপর কণ্ঠেও ছিল আক্রমণাত্মক সুর। তিনি বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়া খুবই বিপজ্জনক আচরণ করছে।’ বৃহসপতিবার পোল্যান্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটি লজ্জাজনক যে উত্তর কোরিয়া এ ধরনের আচরণ করছে। এ বিষয়ে কিছু একটা করতে হবে।’ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খুবই ভয়াবহ কিছু বিকল্প আমরা চিন্তা করছি। তার মানে এই নয় যে, আমরা তা করবো। আমি লাল দাগ টানতে পছন্দ করি না।’ এ খবর দিয়েছে বিবিসি ও সিএনএন।
খবরে বলা হয়, রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালে পিয়ংইয়ং-এর বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নতুন প্রস্তাবনা উত্থাপনের কথাও জানান। তিনি উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে সামরিক উস্কানি হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি পিয়ংইয়ং-এর বিরুদ্ধে আরো বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন। তার বক্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া নিজেদের সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে।
অপরদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস জাপানে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার এই পরীক্ষা অগ্রহণযোগ্য উস্কানি। প্রেসিডেন্ট ট্রামপ ওই পরীক্ষার পরপর উত্তর কোরিয়ার একমাত্র মিত্র চীনের সমালোচনাও করেন। উত্তর কোরিয়াকে নিবৃত করার ব্যাপারে অতীতে চীনের ওপর ভরসা করার কথা অনেকবার ব্যক্ত করেছেন ট্রামপ। কিন্তু সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর তিনি দৃশ্যত বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘চীন আমাদের সঙ্গে কাজ করছে এমন কথা ঢের হয়েছে! এ বছরের প্রথম চার মাসে দুই দেশের বাণিজ্য ৪০ ভাগ বেড়েছে।’ উল্লেখ্য, চীন ও রাশিয়াও উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ পরীক্ষার নিন্দা জানিয়েছে। তবে দেশ দু’টি এ সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে সামরিক পদক্ষেপের বদলে আলোচনার পক্ষে।
তবে পিয়ংইয়ং বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র তার ‘শত্রুভাবাপন্ন নীতি’ পরিবর্তন করার আগ পর্যন্ত সমঝোতায় যাবে না তারা। এছাড়া দেশের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প নিয়ে কোনো সমঝোতায় যেতে রাজি নয় দেশটি। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারবে না। এ সংক্রান্ত কোনো প্রকল্পও চালাতে পারবে না। কিন্তু উত্তর কোরিয়া এই প্রস্তাবনা মানতে রাজি নয়।