এক বছর আগে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে প্রধান করে যাত্রা শুরু করেছিল জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচক কমিটি। সহযোগী কোচ হিসেবে রাখা হয়েছিল হাবিবুল বাশার সুমন ও সাজ্জাদ আহমেদ শিপনকে। তবে গেল বছর নির্বাচক কমিটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি নতুন একটি মাত্রা যোগ করে। এ কমিটিতে রাখা হয় জাতীয় দলের প্রধান কোচ হাথুরুসিংহে ও ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনকে। জাতীয় দল নির্বাচনের সময় ভূমিকা রাখেন তারাও। এই বিষয়ে মতপার্থক্য প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদের পদত্যাগের পরই তার কমিটিতে থাকা মিনহাজুল আবেদীনকে প্রধান নির্বাচক করার সিদ্ধান্ত হয়। গেল ৩০শে জুন সেই নির্বাচক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই নির্বাচকরা অপেক্ষায় আছেন নতুন চুক্তির জন্য। এক সপ্তাই পার হলেও বিসিবি নীরব। প্রশ্ন উঠেছে আগের কমিটিই বহাল থাকবে নাকি নতুন কেউ আসবে? এই বিষয়ে নান্নু বলেন, ‘আমাদের এক বছরের চুক্তি শেষ হয়ে গেছে। এখন নতুনভাবে চুক্তির অপেক্ষায় আছি। কোনো পরিবর্তন হবে কি না তা বোর্ড বলতে পারবে। সাধারণত বোর্ডসভাতেই সিদ্ধান্ত হয় এ সব বিষয়ে। কিন্তু যতটা জানি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে হলে, বোর্ড সভাপতি অনুমোদন দিলে এমনিতেই হয়ে যাবে। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যেই হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন জানিনা নতুনভাবে কবে চুক্তি হচ্ছে। যতটা শুনেছি খুব দ্রুতই চুক্তি হবে। তবে তার আগে বোর্ড হয়তো আমাদের সঙ্গে কথাও বলবে। এই বিষয়ে আসলে বলতে পারবে বোর্ডের প্রধান নির্বাহী (সিইও)।’ গতকাল জানতে চাইলে বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘আমাদের নির্বাচকদের সঙ্গে চুক্তি ছিল একবছরের। তা শেষ হয়ে গেছে। এখন আমরা চুক্তি নতুনভাবে করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমেই চুক্তি হবে, সেজন্য হয়তো বোর্ড সভার প্রয়োজন হবে না। দ্রুতই চুক্তি হয়ে যাবে।’
নির্বাচক কমিটিতে রদবদল হচ্ছে নাকি আগের কমিটিই থাকছে এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান সিইও। তিনি বলেন, ‘এটি আসলে এখনই বলা যাবে না। বলতে পারি দ্রুতই চুক্তি হয়ে যাবে।’ অবশ্য দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মধ্যে হলে রদবদলের তেমন সুযোগও নেই।
অনূর্ধ্ব-১৯ দলের নির্বাচক থেকে জাতীয় দলের নির্বাচক হয়েছিলেন সাজ্জাদ আহমেদ শিপন। গেল বছরের দায়িত্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় দল মানেই অন্য মাত্রার চ্যালেঞ্জ। এখানে অনেক প্রেসার থাকে। তার পরও মনে হয় একটি বছর আমার ভালোই অভিজ্ঞতা হয়েছে। বেশ ভালো কিছু ফলাফলও ছিল আমাদের।’ নতুন চুক্তির প্রসঙ্গে শিপন বলেন, ‘আসলে চুক্তি শেষ হওয়ার পর অপেক্ষাতে আছি নতুন চুক্তির জন্য। যতটা শুনেছি দ্রুতই নতুনভাবে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে। তবে এখন জানিনা কোনো রদবদল হবে কি না। যতটা জানি, আমাদের প্রধান নির্বাচক নান্নু ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেই প্রক্রিয়াটা শুরু হবে। মেয়াদ বাড়ানো হলে রদবদল হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে যা-ই হোক এখন আমরা অপেক্ষাতে আছি।’ দীর্ঘদিন নির্বাচক কমিটিতে থাকা জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনও জানালেন তিনি অপেক্ষাতে আছেন। তবে বোর্ডের অনুমতি ছাড়া তিনি এই বিষয়ে কথা বলতে পারবেন না। তিনি বলেন, ‘আমাদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। নতুন চুক্তির বিষয়ে কিছুই জানি না। বোর্ডের অনুমতি ছাড়া আমাদের এ বিষয়ে কথা বলাও ঠিক হবে না।’
গত বছর জুনে বিসিবি বোর্ডসভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিস্তর বিশিষ্ট নির্বাচক কমিটির অনুমোদন দিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছিল এতে জটিলতা বাড়বে। তবে গত এক বছরে এমন কোনো ঘটনা হয়নি বলেই জানা যায়। তিন নির্বাচকের সঙ্গে জাতীয় দলের কোচ ও ম্যানেজারও দল নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। একটি সূত্রে জানা যায়, শুধু জাতীয় দলই নয়, এইচপিসহ অন্যান্য দল নির্বাচনেও তাদের সঙ্গে আলোচনা করে থাকেন নির্বাচকরা।