দু’দিন আগে মেয়ে কলেজছাত্রী সাথী খাতুন খুন হয়। আর দু’দিন পর পিতা সাইদুর রহমান বাদলের ট্রেনে কাটা লাশ উদ্ধার করা হলো। সিরাজগঞ্জে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। যদিও এলাকায় প্রচার আছে, বাদল গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে কামারখন্দ জামতৈল রেল স্টেশনের কাছে কর্ণসুতী নামক স্থানে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কেউ নেই। এর আগে রোববার সাথীকে একা বাড়ি রেখে অপর দুই সন্তানকে নিয়ে তার পিতা বাদল ও মা মনোয়ারা বেগম পার্শ্ববর্তী ডুকুরিয়াবেড়া গ্রামের আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে যান। পরদিন সোমবার বাড়ি ফিরে মেয়েকে ঘরে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। বাড়ি থেকে একশ গজ দূরে বাঁশঝাড়ে সাথীর গলাকাটা লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। সাথীর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ঘটনার পর পুলিশ সাথীর পিতা-মাতাকে তাদের হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। সাথী শিয়ালকোল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসির ছাত্রী ছিল। ঘটনার দুদিন পর গতকাল সকাল ৮টায় সাইদুর রহমান বাদল (৪০) তার নিজ বাড়ি সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের জগৎগাতী গ্রাম থেকে বের হন। এরপরই বেলা সাড়ে ১০টায় পার্শ্ববর্তী কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল রেল স্টেশনের কাছে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সিল্কসিটি ট্রেনে কাটা পড়ে সাইদুর রহমান বাদল। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সাথীর মা মনোয়ারা ও বড় বোন সীমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে সাথীর ৫ বছরের ভাই সবুর। ওদিকে বাদলের লাশ জিআরপি থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এলাকাবাসী জানান, সাথীর বাবা বিদেশে লোক পাঠাতেন। টাকা নিয়ে অনেককে পাঠাতে ব্যর্থ হন তিনি। এভাবে সাত লাখ টাকা ঋণী হয়ে যান তিনি। লোকজন এসে তাকে টাকা দিতে চাপ দিতেন। এ নিয়ে এলাকায় সালিশ বৈঠকও হয়েছে। এ অবস্থায় মেয়ে সাথী হত্যা ও তার ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুকে রহস্যজনক বলছেন এলাকাবাসী। সিরাজগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, পরপর দুটি ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। কলেজছাত্রী খুনের ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা সকল দিক ক্ষতিয়ে দেখছি। আশা করছি দ্রুত রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।