মেক্সিকোর দক্ষিণ উপকূলে ৮.১ মাত্রার এক ভূমিকম্পে অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে মেক্সিকোতেই নিহত হয়েছেন ৫ জন ও গুয়াতেমালায় ১ জন। দেশটির প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতো, ভূমিকম্পটিকে মেক্সিকোর ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে এর মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ দশমিক ১ কিন্তু মেক্সিকোর জরিপ অনুসারে তা আরো বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। পিজিজিয়াপান শহর থেকে ৮৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আঘাত হেনেছে এই ভয়াল ভূমিকম্প। মেক্সিকো, গুয়াতেমালা, এল সালভাদর, কোস্টারিকা, নিকারাগুয়া, পানামা ও হন্ডুরাসে সুনামি হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভূমিকম্পের প্রভাব মেক্সিকো শহরে অনুধাবন করা গেছে বেশি। কেঁপে ওঠেছে ভবনগুলো। মানুষজন ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে খোলা আকাশের নিচে। প্রায় ১ মিনিট ধরে চলেছে কম্পন। পেনা নিয়েতো জানান, প্রায় ৫ কোটি মানষের কাছে এই কম্পন অনুভূত হওয়ার কথা। সময়ের সঙ্গে মৃতের সংখ্যাও বাড়তে পারে। ভূমিকম্পের প্রথম ধাক্কা শেষ হওয়ার পর কমপক্ষে ৪.৩ থেকে ৫.৭ মাত্রার ডজনখানেক ‘আযাটার-শক’ (মূল কম্পনের পরবর্তীতে আসা ছোট কম্পন) অনুভূত হয়েছে। মৃতদের মধ্যে চারজন প্রাণ হারিয়েছেন মেক্সিকোর চিয়াপাস রাজ্যে তাবাস্কো রাজ্যে, ২ শিশু, ওয়াক্সাকা রাজ্যে ২০ জন প্রাণ হারিয়েছে। ওয়াক্সাকা রাজ্যে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে জুচিতান শহরে। শুধু এই শহরটিতেই নিহত হয়েছেন ২০ জন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছাড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন ধসে পড়া ভবনের ছবি। ধসে পড়া ভবনগুলোর মধ্যে জুচিতানের পৌর প্রাসাদও রয়েছে। মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চল ও গুয়াতেমালার বেশকিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ৭০ কিলোমিটার। এর আগে ১৯৮৫ সালে এরকম শক্তিশালী ভূমিকম্পের শিকার হয় দেশটি। তাতে প্রাণ হারায় হাজার হাজার মানুষ। মেক্সিকোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, এই ভূমিকম্পটির মাত্রা ৮ দশমিক ৪ এর বেশি ছিল। ইতিমধ্যেই দেশটির ১১টি রাজ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিদ্যালয়। কিছু কিছু এলাকায় ঘটেছে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার ঘটনা। এদিকে ঘূর্ণিঝড় কাতিয়ার কবলে পরার হুমকিতেও রয়েছে মেক্সিকো। ক্যাটাগরি এ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়টি টাম্পিকো শহর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে। জাতীয় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের দেয়া তথ্য অনুসারে, এটি ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার বেগ অর্জন করেছে।