দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে বল হাতে নিজেকে ঝালিয়ে নিতে চাইছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। আর প্রস্তুতিটা ভালোই সারলেন দেশসেরা এ পেসার। তিন বছর পর প্রথম শ্রেণির চারদিনের ম্যাচে খেলতে নামেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। আর গতকাল জাতীয় ক্রিকেট লীগে রংপুর বিভাগের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে খুলনার বল হাতে ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ১২ রানে তিন উইকেট নেন মাশরাফি। যদিও ম্যাচ শেষ হয় ড্রতে। প্রথম ইনিংসে বল হাতে ১৪.৩ ওভারের স্পেলে ৬১ রানে এক উইকেট নেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ খ্যাত মাশরাফি। গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭/৪ সংগ্রহ নিয়ে খেলা শেষ করে রংপুর বিভাগ। এতে ‘ডাক’ মারেন রংপুরের ব্যাটিং অর্ডারের শীর্ষ পাঁচের তিন খেলোয়াড়। এর আগে খুলনার ব্যাট হাতে দ্বিশতক পূর্ণ করেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়।
আগের দিন ১৭২ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। গতকাল ব্যক্তিগত ২১৬ রানে উইকেট দেন বিজয়। ৩৫৬ বলের ইনিংসে বিজয় হাঁকান ১৮টি চার ও দুটি ছক্কা। খেলা শেষে ম্যাচসেরার পুরস্কারও ওঠে জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই ব্যাটসম্যানের হাতে। ৬৩ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে বিজয়ের রয়েছে ১৩টি শতক। তবে ডাবল সেঞ্চুরির কৃতিত্ব দেখালেন প্রথমবার। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে প্রথম দফা ব্যাটিংয়ে রংপুর বিভাগের ৪৭১ রানের জবাবে ৪৯৫/৯ সংগ্রহ নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে খুলনা বিভাগ। রংপুর বিভাগের বল হাতে ২০ ওভারের স্পেলে ৭০ রানে পাঁচ উইকেট নেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা অফস্পিনার-অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। টেস্ট সিরিজ দিয়ে শুরু হচ্ছে টাইগারদের এবারের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। আর তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে মাঠে গড়াবে আগামী ১৫ই অক্টোবর।
রোমাঞ্চের ম্যাচে জয় রাজশাহীর
লো স্কোরিং ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয় পেলো স্বাগতিক রাজশাহী বিভাগ। জাতীয় ক্রিকেট লীগের টিয়ার-টু প্রতিযোগিতায় সিলেট বিভাগের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জয় দেখলো তারা। গতকাল ম্যাচের চতুর্থ দিনে ২১২/৪ সংগ্রহ নিয়ে জয় নিশ্চিত করে রাজশাহী বিভাগ। আগের দিনের ৮৬/২ সংগ্রহ নিয়ে গতকাল রাজশাহীর ব্যাট হাতে নৈপুণ্য দেখান ফরহাদ হোসেন। ম্যাচজয়ী ৭০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে টস জিতে সিলেট বিভাগকে ব্যাটিংয়ে পাঠান স্বাগতিক রাজশাহী বিভাগের অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম অমি। আর সিলেটের ১২৮ রানের জবাবে মাত্র ৭৯ রানে গুঁড়িয়ে যায় রাজশাহী বিভাগের প্রথম ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসেও মলিন নৈপুণ্য দেখায় সিলেট। দ্বিতীয় দফায় তাদের ইনিংস শেষ হয় ১৬২ রানে। এতে জয়ের জন্য ২১২ রানের টার্গেট পায় রাজশাহী। প্রথম ইনিংসে দারুণ বোলিং নৈপুণ্য নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে সিলেটের অফস্পিনার সায়েম আলমের হাতে। প্রথম ইনিংসে ৯.৪ ওভারের স্পেলে ৩২ রানে ৬ উইকেট নেন সায়েম।
সাজ্জাদের ব্যাটে বাঁচলো চট্টগ্রাম, ম্যাড়ম্যাড়ে ড্র কক্সবাজারে
মাত্র ১৩০ রানে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল চট্টগ্রাম বিভাগের প্রথম ইনিংস। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের ছিল মূলত ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই। জাতীয় লীগের টিয়ার-টু প্রতিযোগিতায় ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে জয়ের জন্য শেষ দিনে ৩৮৪ রানের দরকার ছিল চট্টগ্রামের। তা সম্ভব না হলেও ব্যাট হাতে ক্রিজে সারাদিন পার করে দিয়ে ড্রতে শেষ করে তারা ম্যাচটি। চট্টগ্রাম বিভাগের ওয়ানডাউন ব্যাটসম্যান সাজ্জাদুল হক খেলেন ৮২ রানের ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস। ১২২ বলের ইনিংসে সাজ্জাদ হাঁকান ৯টি চার ও তিনটি ছক্কা। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকান ঢাকা মেট্রোপলিশের ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আশরাফুল। ম্যাচের চার ইনিংসে ওটাই একমাত্র সেঞ্চুরি।
তবে খেলা শেষে ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে একই দলের নিহাদুজ্জামানের হাতে। প্রথম ইনিংসে ১৫.৫ ওভারের স্পেলে ৪৫ রানে পাঁচ উইকেট নেন ঢাকা মেট্রোর এ বাঁ-হাতি স্পিনার। জাতীয় ক্রিকেট লীগের টিয়ার-ওয়ান প্রতিযোগিতায় কক্সবাজারে বৃষ্টিবিঘ্নিত ঢাকা বিভাগ ও বরিশাল বিভাগের ম্যাচটি শেষ হয় ম্যাড়ম্যাড়ে ড্রতে। চারদিনের ম্যাচে সাকুল্যে খেলা হয় ৯০ ওভার। এতে ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ঢাকা বিভাগের সংগ্রহ ছিল ৩০৯/২। এতে ব্যাট হাতে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকান ঢাকা বিভাগের রনি তালুকদার ও সাইফ হাসান।