কক্সবাজারের রামুতে আবদুল জব্বার নামে স্থানীয় এক যুবককে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে এক রোহিঙ্গা। শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঘাতক রোহিঙ্গা হাফেজ জিয়াবুল মোস্তাফাকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত আবদুল জব্বার
রামুর খুনিয়াপালংয়ের কালুয়ারখালীর হেডম্যান বশির আহম্মদের ছেলে।
রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ জানান, শুক্রবার গভীর রাতে খুনিয়া পালংয়ের ২নং ওয়ার্ডের হেডম্যান পাড়ায় সামাজিক বনায়নের বাগান পাহারা দেয়ার সময় আবদুল জব্বারকে রোহিঙ্গা হাফেজ জিয়াবুল মোস্তফা গলাকেটে ও কুপিয়ে আহত করে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
রামু থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম লিয়াকত আলী বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘাতক রোহিঙ্গা হাফেজ জিয়াবুল মোস্তফাকে আটক করেছে পুলিশ।মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় বিকালে বিলোয়ারা বেগম (২৬) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি রোহিঙ্গা শামশুল আলমের স্ত্রী। তারা বিগত ৭ বছর আগে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। আর খুন হওয়া এলাকায় পাহাড়ি ভূমি কিনে বিগত ৪-৫ মাস আগে থেকে বসবাস করে আসছিল। এসব তথ্য জানিয়ে জব্বার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামু থানার উপ-পরিদর্শক সৈয়দ ছানাউল্লাহ বলেন, প্রাথমিক ধারণায় উঠে আসছে পরকীয়া সংক্রান্ত ঘটনায় জব্বার খুন হতে পারে। বিলোয়ারাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের হামলায় আহত ৪, নিখোঁজ-৫
ওদিকে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের হামলায় স্থানীয় ৪ ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছে ৫ ব্যক্তি। এ ঘটনায় বালুখালী এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে ২টি অস্ত্রসহ ১০ রোহিঙ্গাকে আটক করে। আটকরা হলেন, কুতুপালং ক্যাম্প তেলীপাড়া এলাকার মোহাম্মদ কাছিমের পুত্র মোহাম্মদ রফিক (৩২), সুলতান আহমদের পুত্র মোহাম্মদ ইসমাইল (২৭), নুর মোহাম্মদ পুত্র মো. ইউনুছ, বালুখালী থেকে নুরুল বশর (৩০) ও ইলিয়াস (২৮)। অন্যদের নাম জানা যায়নি। এ সময় তাদের কাছ থেকে গুলিসহ ২টি দেশীয় তৈরি এলজি উদ্ধার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী বেদার উদ্দিন জানায়, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে বালুখালী ক্যাম্পের জি-২৭ থেকে ৫ জন, এ ব্লক থেকে ১ থেকে ৩ জন, এ-৭ থেকে ২ জনসহ মোট ১০ জনকে অস্ত্রসহ আটক করে যৌথবাহিনী।
বালুখালী ক্যাম্পের লালু মাঝি জানান, রোহিঙ্গা শিবিরে ডাকাত পড়েছে বলে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়। রোহিঙ্গারা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে ৪ জন টিউবওয়েল মিস্ত্রিকে হামলা করে গুরুতর জখম করে। পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় বলেও তিনি জানান।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গতরাতে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে একটি মসজিদে থাকা স্থানীয় ৪ জন টিউবওয়েল মিস্ত্রিকে ১০/১২ জনের একটি রোহিঙ্গা গ্রুপ ব্যাপক মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে টিউবওয়েল মিস্ত্রিদের ক্যাম্প থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।