রায়হান করির, স্বদেশ নিউজ২৪.কম: চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০১৯ সাল পর্যন্ত। কিন্তু চুক্তির অনেকটা সময় বাকি থাকতেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন চান্দিকা হাতুরুসিংহে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কাগজে-কলমে হাতুরুসিংহের পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করলেও ধরে নেওয়া হচ্ছে, বাংলাদেশে হাতুরুসিংহে পর্ব শেষ। স্বভাবতই আলোচনায় এবার নতুন কোচ। এ পদে শোনা যাচ্ছে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনের নাম। আর সুজনও জানালেন পুরোপুরি প্রস্তুতি আছেন তিনি।
তবে এ ব্যাপারে তেমন কিছুই জানেন না সুজন। বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে তাকে ভাবা হচ্ছে, বোর্ড থেকে এমন কোনও ইঙ্গিতও পাননি বলে জানিয়েছেন তিনি। ইঙ্গিত না পেলেও কোচের পদে নিজেকে দেখার বাসনা আছে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে বিসিবির পরিচালক পদে দায়িত্বরত সুজনের। জানালেন, তিনি প্রস্তুত। সুযোগ পেলে ভালভাবে এই দায়িত্ব পালন করতে চান তিনি।
কোচের পদে অনেকের নামই শোনা যাবে। বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব নিতে আপনি প্রস্তুত কি না? উত্তরে সুজন বলেন, ‘আমার মনে হয় না খুব কঠিন এই জিনিসটা। এই লেভেলে কোচিংটা এতটা কঠিন না। মোটিভেশনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্লানিং ভাল হতে হয়। দায়িত্বটা আমি পাব কি না জানি না। যদি পাই তাহলে চেষ্টা করব ভালভাবে করতে। এই মুহূর্তে আমি মনে করি, আমি পুরোপুরি প্রস্তুত।’
পুরো ক্যারিয়ারে অনেক চ্যালেঞ্জই নিয়েছেন সাবেক এই অলরাউন্ডার। আরও একবার চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত সুজন, ‘নানা সময়ে নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমি এখানে এসেছি। যখন অধিনায়ক হই, ভাঙাচোরা একটি দলকে দাঁড় করানোর চ্যালেঞ্জ ছিল আমার কাছে। কোচিংয়ে তো অনেক বছর ধরেই কাজ করছি। জাতীয় দলের দায়িত্বেও ছিলাম সহকারী কোচ হিসেবে। কোচিং তো খুব কাছ থেকেই দেখেছি।’
বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের পদে নিজের নাম শোনা প্রসঙ্গে সুজন বলছেন, ‘এটা তো আমি জানিই না। এটা নিয়ে কোনও কথা হয়নি। অবশ্যই আমরা চাইব বাইরে থেকে ভাল কাউকে আনতে। আমার নাম আসছে, আজ শুনলাম একজনের কাছ থেকে। আমি নিজেই বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত নই। এটা আসলে সময়ের ব্যাপার। বোর্ড সভাতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা ভাল কোচের দিকেই যাব।’
তবে হাতুরুসিংহের এমন হঠাৎ পদত্যাগের সিদ্ধান্তে রীতিমতো অবাক সুজন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এক সাথে থেকেও এমন কোনও আলোচনা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও অবাক হয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলাম, পাঁচদিন ওখানে থেকেছি। এমন কোনও কথাই হয়নি। কাল শুনে অনেক অবাক হয়েছি। ও আসবে কি না এখনও নিশ্চিত না। যতদূর শুনলাম পদত্যাগ করেছে। কিন্তু কেন কিংবা কী কারণে সেসব জানায়নি।’
কয়েক দফায় বিসিবি থেকে হাতুরুসিংহের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু যোগোযোগ করা সম্ভব হয়নি। সুজনও একই কথা বলছেন, ‘গতকাল ফোনে আমিও চেষ্টা করেছি। ফোন বন্ধ ছিল। হয়তো কিছুদিন পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। আমি মনে করি সে ইতিবাচক একজন মানুষ। আশা করি তার কাছ থেকে আমরা কারণ জানতে পারব। কেউ যদি চলে যেতে চায়, তাহলে তাকে আটকে রাখা সম্ভব নয় আমাদের পক্ষে।’
কোচিং পেশায় বেশ আগেই নাম লিখিয়েছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। জেমি সিডন্স যুগে (২০০৭-১১) বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। এছাড়া ক্লাব ক্রিকেটে বেশ কয়েকটি দলকে পথ দেখিয়েছেন তিনি। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে তার কোচিংয়ে ২০১৪-১৫ মৌসুমে শিরোপা জেতে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। পরের মৌসুমে (২০১৫-১৬) পথ দেখিয়ে আবাহনী লিমিটেডকে শিরোপা এনে দেন সুজন।