যশোরে ৭ কর্মকর্তাসহ ১৬ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অপহরণ ও গুম মামলা হয়েছে। আজ দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে যশোর কোতোয়ালি থানার ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন হিরা খাতুন নামের এক মহিলা। আদালত এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আসামীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন- এসআই শহিদুল ইসলাম, এসআই আমির হোসেন, এসআই হাসানুর রহমান, এএসআই রাজন গাজী, এএসআই সেলিম মুন্সি, এএসআই বিপ্লব হোসেন ও এএসআই সেলিম আহমেদ।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, গত ৫ই এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে তার একমাত্র পুত্র সাইদ ও তার বন্ধু শাওন শহরের পৌর পার্কে বেড়াতে যায়। ওই দিন বেলা ১২টার দিকে সাব্বির হোসেন নামে এক যুবক তাকে মোবাইল ফোনে জানায় যে পুলিশ সাইদ ও শাওনকে আটক করেছে।সাথে সাথে তিনি পৌর পার্কে যান এবং দেখতে পান যে সাইদ ও শাওনকে পুলিশ গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে। এসময় তিনি দৌঁড়ে গাড়ির কাছে গিয়ে পুলিশের কাছে আটকের কারণ জানতে চাইলে তারা তাকে থানায় গিয়ে কথা বলতে বলেন। পরে থানার সামনে গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থাকলেও তাকে থানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সন্ধ্যা সাতটার দিকে দুই পুলিশ সদস্য তাকে ডেকে ছেলেকে ছাড়ানোর জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু সামর্থ্য না থাকায় তিনি পুলিশের দাবি পূরণ করতে পারেননি। এরপর ৭ই এপ্রিল তিনি পত্রিকা মারফত জানতে পারেন যে, তার ছেলে সাইদ ও শাওন পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গেছে। সাথে সাথে তিনি থানায় গিয়ে এ বিষয়ে কিছু জানার চেষ্টা করলেও পুলিশ তাকে কোন কিছু জানতে দেয়নি। পরে কোর্টে গিয়ে জানতে পারেন যে পুলিশ কোর্টে এ বিষয়ে একটা মামলা করেছে। ওই মামলায় তার ছেলে ও শাওন পালিয়ে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর তার ছেলের সন্ধানে তিনি বারবার পুলিশের কাছে গেলেও তার সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়। এক পর্যায়ে ছেলের সন্ধান চেয়ে তিনি গত ৩০শে মে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার ছেলে ও ছেলের বন্ধুর কোন খোজ মেলেনি। দুই লক্ষ টাকা ঘুষ না পেয়ে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ছেলে ও ছেলের বন্ধুকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ ও তাদের লাশ গুম করে ফেলেছে বলে সন্দেহ করছেন তিনি। সে কারণে তিনি আদালতে মামলা করছেন । যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রে আমলি আদালতের বিচারক শাহিনুর রহমান পিটিশনটি গ্রহণ করে এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।