মুসলিম ইস্যুতে বিরোধ দেখা দিয়েছে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে। বিষয়টি এখন গণমাধ্যমের কল্যাণে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। বুধবার মুসলিম বিরোধী তিনটি ভিডিও টুইটারের রিটুইট করেন ট্রাম্প। ভিডিওগুলো প্রকাশ করেছে বৃটেনের উগ্র ডানপন্থি সংগঠন বৃটেন ফার্স্ট-এর উপনেতা জয়দা ফ্রানসেন। তাতে মুসলিমদেরকে নির্যাতনকারী, আইন লঙ্ঘনকারী হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এমন টুইটকে রিটুইট করে ট্রাম্প ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। তার মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর মাধ্যমে ভুল করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, বৃটেন ফার্স্ট একটি উগ্র ডানপন্থি গ্রুপ। তারা ঘৃণা ছড়িয়ে দিয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব ঘৃণা প্রসূত বক্তব্য বা ভিডিও মিথ্যায় ভরা। এর মাধ্যমে তারা উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। যেসব মানুষ আইন মেনে চলেন তাদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেয়াই তাদের কাজ। উগ্র পন্থিদের এমন অনাচার বৃটিশ জনগণ জোর দিয়ে প্রত্যাখ্যান করছে। তাদের এ প্রচেষ্টা অর্থহীন। কারণ, বৃটেন যেসব নীতি অবলম্বন করে তার মধ্যে রয়েছে সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা। তবে বৃটিশ সরকারের এমন বক্তব্য নজরে এসেছে ডনাল্ড ট্রাম্পের। তিনি সঙ্গে সঙ্গে তেরেসা মে’কে পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, আপনি আগে বৃটেনে সন্ত্রাসের দিকে নজর দিন। আমার দিকে নয়, নহর দিন ধ্বংসাত্মক র্যাডিকেল ইসলামিক টেরোরিজমের দিকে। এরা বৃটেনে জায়গা করে নিচ্ছে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন একে অন্যের ঘনিষ্ঠ মিত্র। মাঝে মাঝেই তাদের এ সম্পর্ককে বলা হয় ‘স্পেশাল রিলেশনশিপ’। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে মাথা ঢোকানোর পর প্রথম কোনো বিদেশী নেতা হিসেবে সেখানে তার আমন্ত্রণে প্রবেশ করেছিলেন তেরেসা মে। কিন্তু সর্বশেষ বৃটেন ফার্স্ট গ্রুপটির তিনটি ভিডিও রিটুইট করে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছেন ট্রাম্প। তার এমন কর্মকা-ের কড়া সমালোচনা করেছেন বৃটেনের শীর্ষ স্থানীয় বেশ কিছু রাজনীতিক। এর মধ্যে রয়েছেন ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবিও। তিনি ট্রাম্পের পদক্ষেপকে গভীরভাবে বিরক্তিকর বলে উল্লেখ করেছেন। আরো বলেছেন, উগ্র ডানপন্থিদের কণ্ঠকে আরো বহুগুন বাড়িয়ে দেয়ার পথটিই বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। সঙ্গে সঙ্গে বৃটেনে ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় সফর বাতিল করারও দাবি নতুন করে জোরালো হয়েছে। তবে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বুধবার জানানো হয়েছে, নিমন্ত্রণ বাতিল করা হয় নি। রাষ্ট্রীয় সফরের ওই নিমন্ত্রণ এখনও বহাল আছে।