যদিও সম্প্রতি বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। তবে তা এখনো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এর কারণ অনুসন্ধান করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে গণমাধ্যমকে জানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইড ‘র একটি সূত্র।
গত বছরের অক্টোবরে নওগাঁর আমদানিকারক জগদীস চন্দ্র রায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ কেজি পেঁয়াজ আমদানি করে। যার মূল্য ছিল কেজিতে ২০ টাকা ৮৬ পয়সা থেকে ২৯ টাকা ২১ পয়সার মধ্যে। আমদানিকারক এই পেঁয়াজ বিক্রি করেন ৩৯ টাকা থেকে ৫৪ টাকায়। এতে তার লাভ হয় ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে আরো ১০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রির কারণে সাধারণ ক্রেতাকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে ৭০ টাকায়। এমন ১৪/১৫টি বড় আমদানিকারক এসময় শুধু হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সাড়ে ১১ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করে, যাতে মুনাফা হয় ২৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। সিআইডির অনুসন্ধানে দেখো গেছে, পেয়াজের আমদানিকারক, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা গেলো ৫ মাসে ক্রেতার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় অন্তত: ৮’ শো কোটি টাকা। তবে তা মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। গোপাল চন্দ্র রায় নামে এক আমদানিকারক বলেন,তথ্যটি সঠিক নয়। তার দাবি ওপার আর এপারের খরচ দিয়ে মাত্র ৫০ পয়সা থেকে দেড় টাকা পযর্ন্ত লাভ হয়।
হাফিজ কর্পোরেশন, ফিরোজ এন্টারপ্রাইজ, রফিক ট্রেডার্সসহ ঢাকার আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও ছিল ভারতীয় পেঁয়াজের বড় আমদানিকারক। হাফিজ কর্পোরেশন গত অক্টোবরে দুই চালানে পেঁয়াজ আমদানি করে, প্রায় দেড় লাখ কেজি। যার দাম পড়ে কেজিতে ২৯ টাকা ১৮ পয়সা। আর বিক্রি হয় ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।রাজধানীর শ্যামবাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী জুয়েল রানা জানান,৩০ টাকার পেয়াঁজ ৪০ আর ৪০ টাকারটা ৭০/৮০ টাকায় বিক্রি করেছে আমদানিকারকরা। তিনি বলেন,বাজারে আমদানি ঘাটতি দেখিয়ে অনেকটা লাভ করেছে তারা।
অভিযোগ উঠেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকির অভাবে পেঁয়াজ নিয়ে কারসাজি চলে। তাই এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানায় সিআইডি।বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম জানান,তদন্ত কাজ চলছে,স্থলবন্দরগুলোতে অনুসন্ধান চালিয়ে ব্যাপক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।এতবড় অংকের টাকা কারা কিভাবে হাতিয়ে নিল,তাও তদন্তে বের হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।
অসাধু এই ব্যবসায়ি চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা কঠিন বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা।