ভোলার মনপুরার বেকার জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত পুনর্বাসনে চাল বিতরণ না করে মজুদ রাখা হয়েছে গুদামে। ফেব্রুয়ারি মাসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিতরণের ছাড়পত্র দিলেও ইউপি চেয়ারম্যান ও গুদাম কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে খাদ্য গুদামেই পড়ে আছে চাল। এতে সরকারি সহায়তা বঞ্চিত রয়েছেন নিষেধাজ্ঞা মেনে চলা সাগরকুলের জেলেরা। দ্রুত চাল বিতরণ না হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
মার্চ-এপ্রিল ২ মাস ইলিশ রক্ষা অভিযানের সময় বেকার জেলেদের পুনর্বাসনে মনপুরা উপজেলার ৪ হাজার ৫শ ৯৪ জন জেলের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে প্রায় ৩৬৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যথাসময়ে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে বরাদ্দকৃত চালের ছাড়পত্র দেয়া হয়।
আর উপজেলা খাদ্য দপ্তর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ২৭ মার্চ ২ মাসের ডেলিভারি অর্ডার দেয় সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানদের অনুকূলে। কিন্তু চেয়ারম্যানরা এসব চাল ডেলিভারি না নেয়ায় গুদামে রাখতে বাধ্য হচ্ছে গুদাম কর্তৃপক্ষ। ফলে সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত জেলেদের দিন কাটছে নানা সংকটে।
জেলেরা বলেন, ‘যা দিচ্ছে, তা আমরা পাই না। দু -একটা যাও পাই তা আমাদের কাছে পর্যন্ত আসে না। এর আগেই শেষ হয়ে যায়।’
গত ২ মাস ধরে পুনর্বাসনের চাল গুদামে পড়ে থাকলেও, গুদামে চাল সংকটের অভিযোগ করেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা।
২নং হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী দ্বীপক বলেন, ‘বিভিন্ন আবহাওয়া ও প্রতিকূলের কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। চাল চলে আসছে আমরা কয়েকদিনের মধ্যে দিয়ে দিব।
৪নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অলিউল্যাহ কাজল বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৩৪০০ ওপরে। আমি বরাদ্ধ ১০৮৪ নাম বরাদ্ধ পেয়েছি। তিন ভাগের একভাগও না। একেবারে কম।’
১নং মনপুরা ইউনিয়ন পরিষদ আমানত উল্যাহ আলমগীর বলেন ‘চাল উত্তোলন করার কথা ছিল, কিন্তু গোডাউন থেকে আমাকে জানিয়েছে, বড় এক জাহাজ চাল এসেছে, এটা আল্লোড না করে চাল দিতে পারবে না।’
আর বারবার তাগিদ দেয়ার পরও চেয়ারম্যানরা চাল নিচ্ছে না বলে জানান খাদ্য বিভাগের এ কর্মকর্তা।
মনপুরা খাদ্য গুদাম খাদ্য পরিদর্শক আজিজুল হক মিয়া বলেন, এরা তো চাল নেয় না। এদের সঙ্গে যতই চিল্লাই এরা চাল নেয় না। একমাস নিলে এদের খরচ নাকি বেড়ে যায়।’
ডিও দেয়া চাল গুদামে মজুদ আছে জানিয়ে উপজেলার এ শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এ সপ্তাহের মধ্যে বিতরণ না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল আজিজ ভূঁইয়া বলেন, ‘তাদের জানানো হয়েছে, এরা যদি গোডাউন থেকে চাল না নেয় তবে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উপজেলায় প্রায় ৮ হাজার নিবন্ধিত জেলেসহ প্রায় ১০ হাজার জেলে রয়েছেন।