দ্বিতীয়বারের মতো আইপিএল থেকে ফিরে ইনজুুরিতে পড়েন মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথমবার ইনজুরির কারণে প্রায় এক বছর মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। সেবারও দেশের হয়ে খেলতে পারেননি অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিরিজে। এবারও মোস্তাফিজ যেতে পারলেন না আফগানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি- টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে। যেখানে বাংলাদেশ দলের জন্য অপেক্ষা করছে র্যাঙ্কিংয়ে মান বাঁচানোর কঠিন লড়াই। তার ইনজুরির যে ধরন শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ।বলতে গেলে আইপিএল খেলেই ইনজুরির শিকার হওয়ার কারণে দেশকে তেমন কোনো সার্ভিসই দিতে পারছে না এ তরুণ পেসার। অথচ তার পিছনেই বিসিবি ব্যয় করছে মোটা অংকের টাকা ও সময়। এ বিষয়ে এবার নড়েচড়ে বসেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। গতকাল তিনি মুঠোফোনে দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, ‘মোস্তাফিজের বিষয়ে আমাদের অনেক সাবধান হতে হবে। খুব বেশি ছাড় দেয়া যাবে না। পরপর দুই বারই সে আইপিএল খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়েছে। এ কারণে সে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজগুলোতে খেলতে পারছে না। আবার ওর চিকিৎসা করাতে হচ্ছে আমাদেরই। এইভাবে আসলে হয় না। বিষয়টি নিয়ে আমরা বোর্ডে আলোচনা করবো’।
আইপিএল-এ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলতে গিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। প্রথমদিকে টানা ছয় ম্যাচে সুযোগও পেয়েছেন। কিন্তু নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি এ কাটার মাস্টার। এরপর দল থেকে বাদ পড়েন। আইপিএল শেষ করে দেশে ফিরেন শনিবার যোগ দেন অনুশীলনেও। কিন্তু যাওয়ার ঠিক আগে জানান পায়ে ব্যথার কথা। ফিজিওকে সে একই কথা বলেছে। কিন্তু তার সেই বলাতে কোন জোর ছিল না। এ বিষয়ে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান বলেন, ‘আসলে আমি মোস্তাফিজের সঙ্গে কথা বলেছি। ওর ফিজিও সঠিকভাবে বলতে পারেননি। যে কারণে ফিজিও বুঝেনি। বলতে পারেন ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’ তবে আকরাম খানও মোস্তাফিজের বিষয়ে কড়া হওয়ার আভাস দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ওকে নিয়ে বোর্ড মিটিংয়ে কথা বলবো। দেশের জন্যই যদি খেলতে না পারে তা তাহলে কি করার আছে?’ অন্যদিকে মোস্তাফিজকে অন্তত ১৫ দিন একেবারেই বিশ্রামে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবি’র চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওর বুড়ো আঙুলে চিড় ধরেছে। যেটি ভালো হতে অন্তত ১৫ দিন বিশ্রামে থাকতে হবে। হাঁটা- চলাতেও সতর্ক থাকতে হবে। এরপরই আমরা রিহ্যাব শুরু করবো। যদি হাঁটতেও হয় ওকে শরীরের ভর যেন আঙুলে না পড়ে সেইভাবে চলতে হবে তার মাঠে মাঠে খেলার কোনো সুযোগ নেই।’ ইনজুরির যে অবস্থা তাতে তার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়া শঙ্কায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসক বলেন, ‘আমার মনে হয় না। সঠিকভাবে বিশ্রাম নিলে আর অন্য কোন সমস্যা না হলে খেলতে পারবে আশা করি।’ শঙ্কার বিষয় ওয়েস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে টেস্ট দিয়ে। ইনজুরি থেকে ফিরে টেস্টে বোলিং করা তার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। ধরণা করা হচ্ছে টেস্ট সিরিজে নাও খেলা হতে পারে তার। কিংবা প্রথম টেস্টে হয়তো মাঠে নামতে না পারার শঙ্কাও রয়েছে।
মূলত বিদেশ লীগে খেলতে গিয়ে ক্রিকেটারদের ইনজুরির ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারদের ইনজুরি ঠেকাতে বিষয়টি এবার বোর্ডসভায় উঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে মোস্তাফিজের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে বলে জানান, নাজমুল হাসান। মোস্তাফিজসহ বাকি ক্রিকেটারদের সতর্ক করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মোস্তাফিজের বিষয়ে আমরা এখন থেকে আরো বেশি সাবধান হবো। দু’বার হলো। ওরতো আমাদের সেখান (ভারত) থেকেই জানানো দরকার ছিল সমস্যার কথা। কিংবা দেশে এসেও জানাতে পারতো। কিন্তু সে তা করেনি। তার ফ্যাকচার যদি হয়ে থাকে তাহলে আগেই চিকিৎসা শুরু করার দরকার ছিল। এছাড়াও আমি সবাইকে জানিয়েছি যে, ক্রিকেটারদের ইনজুরি নিয়ে একটু সতর্ক হতে। কারণ আমাদের সামনে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ রয়েছে। আমরা বোর্ড মিটিংয়ে বসে সিদ্ধান্ত নিবো। আমি এরই মধ্যে আমার পক্ষ থেকে বার্তা দিয়ে দিয়েছি।’